শুক্রবার, ২৬ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

সিলেটে করোনা ছাড়াল দুই হাজার

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে অপ্রতিরোধ্য গতিতে বেড়েই চলছে করোনা সংক্রমণ। মাত্র দুই মাস দশ দিনে সিলেটে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দুই হাজার। এই অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে আইনের কঠোর বাস্তবায়নের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত ঈদুল ফিতরের আগে লকডাউন শিথিল করার পর থেকে বাড়তে থাকে বেপরোয়া মানুষের চলাচল। স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের কেনাকাটা ও পরবর্তীতে বেপরোয়া মানুষের চলাচলের কারণেই সিলেটে সংক্রমণ বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। গত ৩১ মে পর্যন্ত সংক্রমণের এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৫৫৫ জন। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত গত ২৪ দিনে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৭ জনে। গত দুই দিনে শুধু ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৫৭ জন। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সিলেটে করোনা সংক্রমণ ‘স্টেজ ফোর’ অর্থাৎ সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ। প্রতিদিন এই সংক্রমণের হার বাড়তেই আছে। এই অবস্থায় আত্মরক্ষার জন্য ঘরে থাকার কোনো বিকল্প নেই। জরুরি প্রয়োজনে কেউ বের হলে মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি বজায় রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ব। আর সেটা নিশ্চিত করা না গেলে সিলেটের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। এদিকে করোনার উপসর্গ নিয়ে যারা নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন তারাও মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। রিপোর্ট পেতে দেরি হওয়ায় অনেকে উপসর্গ নিয়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

তাদের দ্বারাও সংক্রমিত হচ্ছেন তার পরিবার ও আশপাশের লোকজন। এই অবস্থায় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা অমোচনীয় কালির সিল ব্যবহারের চিন্তাভাবনা করছেন। করোনা সংক্রমণের শুরুতে বিমানবন্দরে প্রবাসীদের যেভাবে  কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য হাতে অমোচনীয় কালির সিল দেওয়া হতো ঠিক একইভাবে উপসর্গ নিয়ে নমুনা পরীক্ষা করাতে আসা লোকদের হাতেও সিল দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এতে করোনার উপসর্গ থাকা লোকদের অন্যরা সহজে চিহ্নিত করতে পারবে এবং তাদের সংস্পর্শে আসা থেকে বিরত থাকবে। সামাজিক মর্যাদার কথা ভেবে উপসর্গ নিয়ে কেউ বাইরেও বের হবে না। তবে সিল দেওয়ার বিষয়টি এখনো পরিকল্পনার পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান।

সিলেটে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ডা. আনিসুর রহমান আরও জানান, যাদের মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা দেবে তাদের দুই সপ্তাহে হোম আইসোলেশনে থাকা উচিত। কিন্তু অনেকে নমুনা পরীক্ষা দিয়েও বাইরে ঘুরে বেড়ান। এতে সংক্রমণ বাড়ছে। এটা বন্ধে উপায় বের করতে হবে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় নিশ্চিতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। অভিযান জোরদারের মাধ্যমে মানুষের বেপরোয়া চলাচল বন্ধ করা না গেলে সিলেটে সংক্রমণ ঠেকানো কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।

সর্বশেষ খবর