মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

হাজার কোটি টাকার আমবাজার

রাজশাহীতে ফলন কম হলেও বাড়তি দামের কারণে ভালো ব্যবসা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

হাজার কোটি টাকার আমবাজার

প্রতি বছরের মতো এবারও রাজশাহীতে আমের বাজার রমরমা। তবে প্রথমবারের মতো এবার আমের বাজার হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। যদিও এবার ফলন গত বছরের চেয়ে কিছুটা কম বলে জানিয়েছে অধিদফতর। ফলন কম হলেও বাড়তি দামের কারণে এবার ভালো ব্যবসা হয়েছে আমের। জানা গেছে, গত বছর যে টাকায় ৩ মণ আম বিক্রি হয়েছে, এবার সে টাকায় বিক্রি হচ্ছে ২ মণ আম। যদিও আমের মুকুল গত বছরের চেয়ে ২১ শতাংশ কম হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, এর আগে এক মৌসুমে আমের বাণিজ্য বা ব্যবসা ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকার মধ্যে ঘুরপাক খেয়েছে। এবার বাড়তি দামের কারণে তা ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, এবার রাজশাহী জেলায় ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। গত বছর চাষ হয়েছিল ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে। সে হিসেবে চাষের এলাকা বেড়েছে ৫৭২ হেক্টর। গত বছর এ জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন। এবার সেখানে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিক টন। নতুন করে এ বছর জেলার বাগমারা, দুর্গাপুর ও গোদাগাড়ী এলাকায় আমের চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে। চাষের জমি বাড়লেও ফলন হয়েছে কম। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, ‘রাজশাহীর বাঘা ও চারঘাটে বড় আম গাছগুলোয় এবার মুকুল কমে এসেছে। তাই উৎপাদন গতবারের চেয়ে কিছুটা কম। তবে দামের দিক থেকে গত বছরের চেয়ে এবার কৃষক বেশি লাভবান হচ্ছেন। গত বছর আমের মণপ্রতি দাম ছিল গড়ে ১ হাজার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা। এবার ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেশি হওয়ায় এবার আমের বাণিজ্য প্রথমবারের মতো ১ হাজার কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে।

বাঘা ও চারঘাট উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আম চাষ হয়। সাদি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান কয়েক বছর ধরে বাঘা থেকে ইউরোপে আম রপ্তানি করছে। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী আসাফুদ্দৌলা জানান, এত দিন তাঁদের ভালোই বেচাকেনা হয়েছে। দুই দিন ধরে বিক্রি কিছুটা কম। গত দুই দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণেও বিক্রি কমে গেছে বলে মনে করছেন তিনি।

বাঘা উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেনের বাগানে এবার আমের ভালো উৎপাদন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে আমের চাহিদা কমে গেছে। সামনে ঈদুল আজহা। কোরবানির কেনাকাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেকে। এ কারণে আমের বিক্রি কিছুটা কমে যেতে পারে।’ আবার নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণেও মানুষ আম কেনা কিছুটা কমিয়ে দিয়েছেন বলেও ধারণা করছেন তিনি। এর পরও তিনি আশা করছেন, মৌসুমজুড়ে ভালো ব্যবসা করতে পারবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর