নওগাঁর মান্দা উপজেলার বিভিন্ন নদী, খাল, বিল ও জলাশয়ে অবাধে ব্যবহার করা হচ্ছে নিষিদ্ধ রিংজাল, ঘেরজাল, কচাল ও ঘূর্ণিজাল। এসব জালে প্রতিনিয়ত ধরা হচ্ছে বোয়াল, রুই, কাতলা, মৃগেল, টেংরা, পুঁটি, শিং, কই, চিংড়ি ও গুঁচিসহ নানা প্রজাতির দেশি মাছের পোনা। এতে একদিকে যেমন মাছের উৎপাদন কমছে, তেমনি হুমকির মুখে পড়ছে বংশবিস্তার। হারিয়ে যেতে বসেছে পাতাশি, বাঁশপাতাড়ি, ইটা, গাগর, কালবাউস, দারিসহ কিছু দুর্লভ প্রজাতির মাছ।
স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, পোনা মাছ নিধন ঠেকাতে নিয়মিত অভিযান চালানোসহ নিষিদ্ধ জালের বিক্রি বন্ধ এবং জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা হোক। মান্দা উপজেলার দ্বারিয়াপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেন বলেন, শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি কমে গেলে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মা মাছ শিকারের মহোৎসব চলে। বর্ষা এলে শুরু হয় পোনা নিধন। কারেন্ট, রিংজাল, কচাল জাল ব্যবহার করেন শিকারিরা। মৎস্য অফিসের তেমন কোনো তদারকি নেই। দিন দিন কমে যাচ্ছে মাছ।
উপজেলার গোপালপুর বাজারের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম শহীদ বলেন, বিলমান্দা থেকে প্রতিদিন প্রচুর দেশি মাছের পোনা ধরে বিভিন্ন বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। মা মাছও ধরা পড়ছে নিষিদ্ধ এসব জালে। এভাবে চললে আগামীতে দেশি মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার পারিলাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ওমর ফারুক জানান, নিষিদ্ধ জালে প্রতিদিন বিলহিলনা থেকে ধরা হয় প্রচুর দেশি জাতের পোনা। এগুলো পারিলাডাঙ্গা আড়তে প্রকাশ্যে বেচাকেনা চলে। এখান থেকে যায় রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলায়। মান্দার পরানপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরার বিষয়টি উপজেলা মৎস্য অফিসকে জানানো হয়েছে। এখনো দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
মান্দা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা দিপংকর পাল বলেন, আগামী সপ্তাহে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানো হবে। এরপরও কেউ নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।