তেহরানের প্রার্থনাকেন্দ্রে আয়োজিত শহিদদের স্মরণসভায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল আব্দুররহিম মুসাভি বলেন, ইরান ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে। ভবিষ্যতে যেকোনো আগ্রাসনের কড়া জবাব দেওয়া হবে।
মেজর জেনারেল মুসাভি বলেন, সুস্পষ্ট ও গোপন সমস্ত প্রমাণ দেখাচ্ছে যে ইসরায়েল লজ্জাজনক পরাজয়ের মুখে পড়েছে। তিনি আরও জানান, ইরানের শত্রুদের প্রকৃত লক্ষ্য ছিল ইসলামি প্রজাতন্ত্রের কাঠামো দুর্বল করা ও দেশটিকে খণ্ডিত করা, যেখানে পারমাণবিক ইস্যু ছিল কেবল একটি অজুহাত।
তিনি উল্লেখ করেন, ইরানি জনগণ ও সশস্ত্র বাহিনীর দৃঢ়তা এবং ঐক্যের কারণেই ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র পরাজিত হয়েছে।
মুসাভি আরও দাবি করেন, ইসরায়েল পুনর্গঠনের অজুহাতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে বাধ্য হয়েছে। তারা আশা করছে ভবিষ্যতে আবার কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে কিন্তু আমরা হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি—আরেকটি ভুল করলে তারা ভয়াবহ প্রতিশোধের মুখোমুখি হবে।
ইরানি সেনাপ্রধান বলেন, যদি যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হয় এবং নতুন ধাপে প্রবেশ করে, ইসরায়েল তখন এমন সব ইরানি সামরিক শক্তির মুখোমুখি হবে যা এখনো ব্যবহৃত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিন ও ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সমর্থন ইরানের মৌলিক নীতি। ইরান তার নীতির প্রশ্নে কখনো আপস করবে না।
এই বক্তব্যের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আলী লারিজানিও বলেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে ভুলভাবে মূল্যায়ন করেছিল। তাদের মূল পরিকল্পনা ছিল পাঁচ-ছয় দিনের মধ্যে ইরান সরকারকে উৎখাত করা এবং জনগণকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করা।
লারিজানি জানান, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল, যার মধ্যে ছিল তিনটি প্রধান শাখার নেতাদের হত্যার পর সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীকে টার্গেট করা।
তিনি বলেন, এই ষড়যন্ত্র ইরানি জাতির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে গভীর অজ্ঞতার প্রকাশ। তারা আমাদের জাতীয় ঐক্য ও প্রতিরোধের শক্তি বুঝতে পারেনি।
লারিজানি জানান, পরিস্থিতির মোড় ঘুরে যায় ২১ জুন, শনিবার—যখন তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতাকারীরা আলোচনায় এগিয়ে আসে। তিনি বলেন, তারা বুঝতে পারে, ইসরায়েল একচেটিয়া অচলাবস্থায় পড়ে গেছে। মাত্র দুই দিনের মধ্যে, ২৩ জুন, সোমবার, তেলআবিব যুদ্ধবিরতির পথ খুঁজতে মরিয়া হয়ে পড়ে।
সূত্র: আল মায়াদিন
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল