শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সেনাবাহিনী সিভিল প্রশাসনের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কাজ করতে চায়

ডিসি সম্মেলনে সেনাপ্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক

সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কাজ করে সরকারের দেওয়া যে কোনো দায়িত্ব সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে চায় বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, বর্তমান সেনাবাহিনী মনে করে বেসামরিক প্রশাসন তাদের সঙ্গে আগের চেয়ে অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ। সেনাবাহিনী তাদের সঙ্গে কাজ করে আগের চেয়ে অনেক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। গতকাল তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের শেষ দিনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ সম্পর্কিত আলোচনায় অংশ নেন সেনাপ্রধান। পরে তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের নানা বিষয় ও কাজের পার্থক্য থাকলেও আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক। উভয়েই দেশের ও জনগণের কল্যাণে কাজ করি। দুর্যোগ মোকাবিলা, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিষয়ে আমরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গতবারও আমি ব্যক্তিগতভাবে এখানে এসেছি, এবারও এসেছি। আমি কিন্তু কোনো প্রতিনিধি পাঠাইনি। জেলা প্রশাসক সম্মেলনে পরপর দুই বছর সশরীরে উপস্থিত হওয়া এটাই প্রমাণ করে যে, এটাকে কতটা গুরুত্ব আমি দিয়েছি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, প্রশাসনে মাঠ পর্যায়ে যারা সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখেন তারা হলেন ডিসিরা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সরকারের অনেক দায়িত্ব পালন করে, যেগুলো কিন্তু বেসামরিক প্রশাসনের আওতায়।

ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারে আমরা যেসব কর্মকাণ্ড করি, সেগুলো কিন্তু বেসামরিক প্রশাসনের পূর্ণ সহযোগিতা ছাড়া করা অসম্ভব। আমি তাদের এই সিগন্যালটা ক্লিয়ারভাবে দিয়ে গেলাম, আমি ব্যক্তিগতভাবে এসেছি, সেনাবাহিনী চাচ্ছে সিভিল প্রশাসনের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কাজ করে সরকারের প্রদত্ত যে কোনো দায়িত্ব সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে।

সেনাপ্রধান আরও বলেন, ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারে আমরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জাতি গঠনমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড, অনেক সিকিউরিটি দায়িত্ব পালন করে থাকি। এখানে কথা প্রসঙ্গে গত বন্যায় সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা সবাই করেছে। অন্যান্য কাজেও আমাদের প্রশংসাগুলো তারা বলেছে। আমরাও বলেছি, বর্তমান সেনাবাহিনীতে নিচের পর্যায়ে সবার ভিতরে একটা অনুভূতি এসেছে যে, সিভিল প্রশাসন আগের তুলনায় আমাদের সঙ্গে অনেক ফ্রেন্ডলি। আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করে আগের চেয়ে অনেক ভালো, স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি। এই যে আমাদের একটা কালচারাল ডিফারেন্স, সেনাবাহিনী তাদের মতো করে কাজ করছে, বেসামরিক প্রশাসন তাদের মতো করে কাজ করছে। উদ্দেশ্য একই, কিন্তু কর্মপদ্ধতির ভিন্নতার কারণে কিছু কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়তো হয়ে থাকে। আমরা যত এগুলো দূর করতে পারব, নিজের কাজের স্বকীয়তা বজায় রেখে, আমার মনে হয় ‘উই উইল বি এইবল টু পারফর্ম হোয়াট ইজ এক্সপেক্টেড ফ্রম আস বাই দ্য গভর্নমেন্ট অ্যান্ড দ্য পিপল অব দ্য কান্ট্রি’।

সেনাবাহিনীর সঙ্গে ফ্রেন্ডলি কোনো কাজ হয় না, ডিসিরা এমন কিছু বলছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কয়েকজন ডিসি ও ডিভিশনাল কমিশনার স্পষ্ট করে কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে বলেছেন যে সেনাবাহিনী কত ভালো কাজ করেছে ও তারা (ডিসিরা) কত খুশি। আমি বললাম, আপনাদের এ কথাগুলো আমি সেনাবাহিনীর সর্বস্তরে পৌঁছে দেব। এতে তাদের মনোবল বাড়বে। ভবিষ্যতে ভালো কাজের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী কী ভূমিকা রাখবে, এ নিয়ে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেনাপ্রধান বলেন, ‘এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।’

মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছিল কি না- জানতে চাইলে সেনাবাহিনী প্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এটি একটি ভিন্ন প্রসঙ্গ, ভিন্ন প্রেক্ষাপট। এখানে সে নিয়ে কোনো কথা হয়নি।’

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর