রাজশাহী মহানগরীতে হঠাৎ বেড়ে গেছে চুরি, ছিনতাই ও নানা ধরনের অপরাধ। প্রতিদিনই নগরীর কোথাও না কোথাও চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এরই মধ্যে রাজশাহীতে এক দিনে মাত্র ৬ ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। যদিও পুলিশ বলছে, এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে নিয়মিত কাজ করছে।
রাজশাহীতে গত বৃহস্পতিবার চোর সন্দেহে দুই নির্মাণ শ্রমিককে বাড়িতে আটকে নির্যাতনের পর পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। মহানগরীর সপুরা বিসিক শিল্প নগরীর বিশাল বিস্কুট ফ্যাক্টরির সামনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুই নির্মাণ শ্রমিকের মধ্যে একজনের নাম রাজু ওরফে রাকিবুল (৪২) ও অন্যজন রেজাউল করিম ওরফে আতাউর (৪৫)। একই দিন নগরীর চন্দ্রিমা থানা এলাকায় কাজেম আলী বিদ্যুৎ (৪০) নামের এক ডিশ ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
খুন ছাড়াও গত এক সপ্তাহে নগরীতে বেশ কয়েকটি চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে বেড়েছে ছিঁচকে চোরের উৎপাত। শুক্রবার গভীর রাতে নগরীর উপশহর এলাকায় স্কুলশিক্ষক মনিরুল ইসলামের ভাড়া বাড়ির দোতলার ভেন্টিলেটর ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটে। মনিরুল ইসলাম জানান, রান্নাঘরের ভেন্টিলেটরের ভিতর দিয়ে চোর ঢুকে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় তিনি নগরীর বোয়ালিয়া থানায় অভিযোগ করেছেন। শনিবার ভোরে নগরীর পার্কের মোড়ের দুটি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া নগরীর মহিষবাথান এলাকায় কয়েক দিনে একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। নগরীর মহিষবাথানের কারিতাস মোড়ের গলিতে চার দিন ধরে একই স্থানে অন্তত চারটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। রিকশা আরোহীর কাছ থেকে মোটরসাইকেলে এসে ব্যাগ ও মোবাইল ছিনতাই করা হয়েছে। এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সহপাঠীর স্ট্যাটাসে ‘হা হা’ রিঅ্যাক্ট দেওয়ায় এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। রাজশাহী কলেজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে গত জানুয়ারির শেষে মোবাইল ফোন ছিনতাই করে পালানোর সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দুই ছিনতাইকারীকে হাতেনাতে আটক করে গণধোলাই দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদারবক্স হলের পাশে এ ঘটনা ঘটে। গত ৩১ জানুয়ারি নগরীর তালাইমারী এলাকায় ঘুরতে এসে ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন এক রাবি ছাত্র। ছিনতাইকারীরা তার ওপর হামলা চালিয়ে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ এসব ঘটনা বিচ্ছিন্ন বললেও সাধারণ মানুষ বলছেন, হঠাৎ করেই নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র রফিকুল ইসলাম বলেন, নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। লোকবল বাড়ানো হয়েছে। গাড়ির সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। যে কোনো অপরাধ দমনে পুলিশ নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।
