রবিবার, ১৪ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

চরজুড়ে সবুজ ফসলের হাসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

চরজুড়ে সবুজ ফসলের হাসি

রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় শুকনো মৌসুমে প্রায় ১ লাখ হেক্টর জমি নদীর বুক চিরে জেগে উঠেছে। এসব জমির মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর আবাদযোগ্য। ওসব জমি চাষ করে প্রায় ৬৫-৭০ কোটি টাকার ফসল উৎপাদন হয়েছে। এসব ফসল কৃষকদের বাড়তি আয়ের পাশাপাশি এই অঞ্চলের অর্থনীতির গতি সচল রেখেছে। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলায় তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, ঘাঘট, চারালকাটাসহ অন্যান্য নদ-নদীতে প্রায় ১ লাখ হেক্টর জমির চর রয়েছে। এর মধ্যে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ৫০ হাজার হেক্টরের কিছু বেশি। জেগে ওঠা এসব চরের জমিতে আলু, ভুট্টা, গম, বাদাম, তিল, তিসি, মিষ্টিকুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, বেগুন, করলা, সরিষা, সূর্যমুখী, গাজরসহ বিভিন্ন শাকসবজি আবাদ হচ্ছে। চরের যেদিকেই তাকানো যাবে সেদিকেই দেখা যাবে সবুজের সমারোহ। এসব চরে আলু প্রতি হেক্টরে ২৪-২৫ মেট্রিক টন, ভুট্টা ১২-১৩ মেট্রিক টন, গম তিন-সাড়ে ৩ টন, শাকসবজি প্রতি হেক্টরে ১৫-২০ টন উৎপাদন হচ্ছে। শুকনো মৌসুমে এসব ফসল ফলায় কৃষকদের বন্যার সময় প্লাবিত হওয়ার দুঃখ কিছুটা লাঘব হয়। নদী পানিশূন্য হয়ে পড়ায় সেগুলো এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়ে কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন করছে। অক্টোবর-মে পর্যন্ত এসব ফসল উৎপন্ন হয়। সবচেয়ে বেশি হয় আমন ধান এবং ভুট্টা। চরাঞ্চলের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে একাধিক সংগঠন কাজ করছে। মেকিং মার্কেটস ফর চরস (এমফোরসি) রংপুর, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার চরে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে।

গঙ্গচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের আবুল কালাম, মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, বন্যার সময় তিস্তা দুই কূল ছাপিয়ে প্লাবিত করলেও শুকনো মৌসুমে ফসলের আবাদ করে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য আসে তাদের। চরে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে বাড়তি টাকায় অনেকে অনেক প্রয়োজন মেটাচ্ছেন। লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ হিল হাদি বলেন, চরের অধিকাংশ মানুষ বিভিন্ন জাতের ফসল উৎপাদন করে দারিদ্র্য দূর করছেন।

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চারালকাটা নদীর চরের কৃষক মাহবুব মিয়া, রবিউল ইসলাম বলেন, চরে পিঁয়াজ, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসল ফলিয়ে তাদের সংসারে সচ্ছলতা এসেছে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক আফতাব হোসেন বলেন, রংপুর অঞ্চলের চরে ৫০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়েছে। যার বাজারমূল্য ৬৫ থেকে ৭০ কোটি টাকার ওপরে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর