বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর সংস্কারে ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা। সেই সঙ্গে দলীয়ভাবে বিভক্ত সাংবাদিক ইউনিয়নগুলোকে তিন দিনের (সোমবার) মধ্যে এক হওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীদের বৈঠক শেষে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর দলীয় লেজুড়ভিত্তির কারণে সাংবাদিকতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিভক্ত সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো দীর্ঘদিন ধরে গণমাধ্যম ও কর্মীদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ। এর সুযোগ নিচ্ছে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। যার কারণে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাধারণ গণমাধ্যমকর্মীরা আক্রমণের শিকার হয়েছেন। একই সঙ্গে গণমাধ্যমের প্রতি মানুষের আস্থা প্রশ্নবিদ্ধ এবং জাতির কাছে অবিশ্বাসের পাত্রে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থার অবসান জরুরি। এমন পরিস্থিতিতে উত্থাপিত ১৩ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিহত সাংবাদিকদের হত্যার বিচার নিশ্চিত করা; ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে আহত গণমাধ্যমকর্মী ও আক্রান্ত গণমাধ্যমকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া; গণমাধ্যমের যেসব মালিক ও নির্বাহী গণমাধ্যমকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে তৈরি করেছেন, তদন্ত সাপেক্ষ তাদের বিচারের আওতায় আনা; গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য অভিন্ন ওয়েজবোর্ড প্রণয়ন; অনতিবিলম্বে নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন; শ্রম আইন অনুযায়ী লভ্যাংশ বণ্টন করা; উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অগণতান্ত্রিক উপায়ে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের দখলদারির যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে অনতিবিলম্বে তা বন্ধ করা; গণমাধ্যমকর্মীদের সর্বস্তরে ভয়ভীতি বন্ধ; গণমাধ্যম পরিচালনার ধরনসহ সার্বিক বিষয়ে সংস্কারের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠন; গণমাধ্যম ও স্বাধীন মত প্রকাশ বিরোধী নিবর্তনমূলক আইনের সব ধারা বাতিল; আইসিটি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি আইনের অধীনে গণমাধ্যমকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহার করা; সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাসহ সব হত্যাকান্ড ও নির্যাতনের বিচার নিশ্চিত করা; বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের গুম, নির্যাতন ও হয়রানির সঙ্গে জড়িতদের বিচার করা; সব গণমাধ্যম যেন গণমানুষের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতে পারে সে নিশ্চয়তার বিধান করা। গণমাধ্যমকর্মীদের পক্ষ থেকে আরিফুল সাজ্জাত ও আহম্মদ ফয়েজ এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন।