আহমেদীয়া ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের বিরুদ্ধে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির আহমেদের মালিকানাধীন কাফরুল থানা এলাকায় অবস্থিত ‘ইউরো স্টার টাওয়ার’ নামে একটি ১০ তলা বাণিজ্যিক ভবন ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ভবনটির আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। গতকাল সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, আহমেদীয়া ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির আহমেদ ২০০৫ সালে আহমেদীয়া বহুমুখী সমবায় সমিতি নামে ঢাকা জেলা সমবায় সমিতি থেকে নিবন্ধন নেন।
২০০৬ সালে নাম পরিবর্তন করে আহমেদীয়া ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে পুনর্নিবন্ধন নেন। প্রতিষ্ঠাকালীন সমিতি জানিয়েছিল, এর উদ্দেশ্য সদস্যদের কাছ থেকে সঞ্চয় ও শেয়ার আমানত সংগ্রহ করে তা থেকে সদস্যদের ঋণ প্রদান এবং তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করা। প্রতিষ্ঠার সময় সদস্য সংখ্যা ছিল ২০ জন, যা ২০১৮ সালের অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী তা দাঁড়ায় ২১ জনে। সদস্যদের মাসিক চাঁদা ছিল ২ হাজার টাকা করে। নিয়ম অনুযায়ী সমিতিটি শুধু সদস্যদের মধ্যেই ঋণ ও সঞ্চয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা থাকলেও মনির আহমেদ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে আমানত সংগ্রহ শুরু করেন। মনির আহমেদ মিরপুর, বনানী, মহাখালী, কাফরুলসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ১০০০ থেকে ১১০০ জনের কাছ থেকে অধিক মুনাফা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ৫৮ কোটি ৩৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে সংগ্রহ করা অর্থ দিয়ে তিনি নিজের নামে বিপুল পরিমাণ স্থাবর সম্পত্তি ক্রয় করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মনির আহমেদসহ আহমেদীয়া ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডে অন্যান্য সহযোগীদের নামে কাফরুল থানায় মামলা হয়। সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট তদন্তে ইব্রাহিমপুর মৌজায় ৮.৪৭ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত ‘ইউরো স্টার টাওয়ার’ নামে একটি বাণিজ্যিক ভবনের সন্ধান পায়। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ জুলাই ভবনটি ক্রোকের আদেশ দেন মহানগর দায়রা জজ আদালত। গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের হওয়া মানি লন্ডারিং মামলাটির আরও তদন্ত চলছে।