প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপ থামছেই না। এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এদিকে, এই ভাইরাস মোকাবেলায় সতর্ক অবস্থানে বিশ্ব। জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
এর মধ্যেই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চীনাদের চেহারারমতো দেখতে শিক্ষার্থীদের ‘করোনাভাইরাস’ নামে ডেকে ডেকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে।
চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর শিক্ষার্থীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এমন অভিযোগ তুলেছেন। এদের মধ্যে যারা মুম্বাইয়ের টিআইএসএস পড়েন তারাই বেশি এমন হেনস্থার শিকার হয়েছেন।
ভারতের নাগাল্যান্ড রাজ্যের একজন ছাত্রের সাথে মুম্বাইয়ে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, "আমার এক বান্ধবীসহ চেম্বুরের শিবাজী চকের কাছ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। সেখানে হঠাৎ তিনজন লোক আমাদের কাছে এসে আমাদের 'করোনাভাইরাস' বলে ডাকতে শুরু করে। আমি তাদের প্রতিবাদ করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়, কিন্তু আমাদের করোনাভাইরাস বলেই ডাকতে থাকে।"
মুম্বাইয়ের মত শহরে যখন এরকম কিছু হয়, তখন তা সত্যিই দুঃখজনক বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মঙ্গোলী মুখাবয়ব ও বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন গঠন থাকার কারণে এ ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হচ্ছেন তারা। এই ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের ফোরাম (এনইএসএফ) একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ এ ঘটনা স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে।
মনিপুর অঞ্চলের আরেক ছাত্র রিচার্ড কামেই বলেন, ক্যাম্পাসের পরিবেশ এ ধরনের ইস্যুতে অনেক সংবেদনশীল হলেও অন্যান্য জায়গায় মাঝেমধ্যেই এরকম বৈষম্যের ঘটনা ঘটে থাকে। লোকাল ট্রেনে ভ্রমণ করার সময় মানুষজন নানারকম মন্তব্য করে। আমি যদি নিজের মত থাকি বা ফোনে কথা বলতে থাকি। মানুষ আমাকে উদ্দেশ্য করে হাসি ঠাট্টা করে। আর এই করোনাভাইরাস আতঙ্কে আবারও মানুষের মধ্যে বৈষম্যমূলক আচরণের বিষয়টি উঠে এসেছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, বৈষম্যমূলক ব্যবহারের প্রতিবাদ করতে যেয়ে আরও বেশি হয়রানির শিকার হয়েছেন তারা। কেউ কেউ যখন প্রতিবাদ করতে যায়, তখন অনেক মানুষই উত্তেজিত হয়ে জবাব দেয় বা সহিংস হয়ে ওঠে। তাই অনেকসময়ই চুপচাপ সহ্য করে যেতে হয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন