১৭ জানুয়ারি, ২০২২ ২১:২৬
ওরিশা পোস্ট ও ইউরোনিউজের প্রতিবেদন

মাস্ক-ভ্যাকসিনে শিথিলতা ইউরোপে; করোনাকে সাধারণ ফ্লু হিসেবে গণ্য করার আহ্বান

অনলাইন ডেস্ক

মাস্ক-ভ্যাকসিনে শিথিলতা ইউরোপে; করোনাকে সাধারণ ফ্লু হিসেবে গণ্য করার আহ্বান

বিশ্বজুড়েই মহামারি করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের তাণ্ডব। ইতোমধ্যে বিশ্বের ১২৮টি দেশে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে।

গত বছরের নভেম্বরে ওমিক্রন প্রথম শনাক্ত হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। গত ২৬ নভেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওমিক্রনকে ‘উদ্বেগজনক’ ধরন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।

যদিও ওমিক্রন সংক্রমণের উপসর্গ খানিকটা মৃদু থাকায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে ইউরোপের দেশগুলো। ফ্রান্স, জার্মানি এবং স্পেনে ওমিক্রনের দাপট অব্যাহত থাকলেও খানিকটা আশার আলো দেখছেন ইউরোপের বিশেষজ্ঞরা।

স্পেনের প্রশাসন নাগরিকদের জানিয়েছে, করোনা এখন এন্ডেমিক ডিজিস। অর্থাৎ ফ্লু যেভাবে রয়েছে, তেমনই করোনাও থাকবে। একে নিয়ে মাথাব্যথা না বাড়িয়ে দৈনন্দিক কাজ করে যাওয়াই বুদ্ধিমানের।

সম্প্রতি ব্রিটেনের শিক্ষা সচিব নাদিম জাহাউই বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ব্রিটেনে প্রতিদিন যেভাবে করোনা সংক্রমণের খবর আসছে, তার থেকে এটা স্পষ্ট হচ্ছে-গোষ্ঠী সংক্রমণের মাধ্যমেই হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে। যে কারণে এই ওমিক্রনের মধ্য দিয়েই হয়তো করোনা অস্ত যাবে। আর তাই করোনা অতিমারী নিয়ে চিন্তার কারণ নেই।

এদিকে, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো সানচেজ জানিয়েছেন, স্পেনে সংক্রমণ আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে তাতে সন্দেহ নেই। তবে কমেছে হাসপাতালে ভর্তির পরিমাণ। কমেছে মৃত্যুহারও।

তাই স্পেনের প্রধানমন্ত্রী জানাচ্ছেন, ওমিক্রন নিয়ে আরও তথ্য ঘেঁটে গবেষণা করে তারপরই আসল সিদ্ধান্তে আসা ঠিক হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হুঁশিয়ারি এড়িয়ে ওমিক্রনকে অনেকেই ‘লঘু’ করে দেখছেন। অনেকে আবার বলে দিয়েছেন, ওমিক্রনের মাধ্যমেই করোনামুক্তি ঘটতে পারে।

আসলে ওমিক্রন করোনার অন্য স্ট্রেনের তুলনায় এতটাই বেশি মাত্রায় সংক্রামক যে এবার বিশ্ববাসীর অধিকাংশই সংক্রামিত হবেন। বিজ্ঞান বলে, বিপুল সংখ্যক মানুষ একটা নির্দিষ্ট স্ট্রেনে আক্রান্ত হলে জনগোষ্ঠীর মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়। কেউ কেউ ইতোমধ্যে আশা প্রকাশ করেছেন, ওমিক্রনের এই বহুল সংক্রমণ সামগ্রিকভাবে প্রতিষেধকের কাজ করবে। সেটা হলে আলাদা করে আর প্রতিষেধক নিতে হবে না। যদিও ভ্যাকসিনের গুরুত্ব কতটা, তা নিয়ে বলার সময় এখনও আসেনি।

তবে বেলজিয়াম কাউকেই টিকা নিতে জোর দিচ্ছে না। ফ্রান্স, জার্মানি কিন্তু দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওমিক্রন ‘মৃদু’ হলেও যাদের রোগ শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেশি, এবার এই তৃতীয় ঢেউয়ে চিন্তা তাদের নিয়েই বেশি। যদিও সব মিলিয়ে আশা করা যায়, ওমিক্রনই হবে করোনার শেষের শুরু।

নেদারল্যান্ডস শোপিং মল, জিম এবং হেয়ারড্রেসারগুলিকে পুনরায় খোলার অনুমতি দেবে। তবে বার, রেস্তোরাঁ, ক্যাফে এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলি অন্তত পক্ষে আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

নরওয়ে সরকার বলেছে, তারা আংশিকভাবে বার এবং রেস্তোরাঁগুলিতে অ্যালকোহল বিক্রির অনুমতি দেবে।

ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেছেন, করোনায় আক্রান্তদের জন্য সেল্ফ আইসোলেশন সাত দিন থেকে কমিয়ে পাঁচ দিন করা হয়েছে। যদি তারা তাদের কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় করোনা পরীক্ষায় দুই বার নেগেটিভ হন।

জার্মানিতে ওমিক্রন বেড়ে যাওয়ায় বার এবং রেস্তোরাঁগুলিতে পুনরায় করোনা বিধিনিষেধ আরোপের পরিকল্পনা করেছে। তবে ১৫ জানুয়ারি থেকে রেস্তোরাঁ, ক্যাফে এবং বারগুলিতে যাওয়া ব্যক্তিদের করোনার টিকা বা করোনা থেকে সুস্থতার প্রমাণ ছাড়াও নেগেটিভ থাকার প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে।

সূত্র: ওড়িশা পোস্ট ও ইউরোনিউজ

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

সর্বশেষ খবর