দেশের তৈরি পোশাক খাতের কর্মীদের দৃষ্টিশক্তি কমে যাচ্ছে। তাদের কম দৃষ্টির প্রভাব পড়ছে তাদের উৎপানশীলতায়। ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক প্রতিষ্ঠানের গবেষণা দেখা গেছে, মোট কর্মীর ২৭ শতাংশেরই দৃষ্টি শক্তি কম। তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী। এজন্য পোশাক খাতের উত্পাদনশীলতা বাড়াতে সাশ্রয়ী মূল্যে চশমা সরবরাহে শ্রমিক, উত্পাদক ও ক্রেতাদের যৌথ উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে শ্রমিক, উৎপাদক ও ক্রেতার ত্রিপক্ষীয় সুবিধা অর্জনে সহায়ক কর্মসূচি ভিশনস্প্রিংয়ের ক্লিয়ার ভিশন ওয়ার্কপ্লেস চালু হয়েছে। চোখের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সাশ্রয়ী মূল্যে চশমা সরবরাহ করার মাধ্যমে কর্মীদের সুরক্ষা ও উত্পাদনশীলতা বৃদ্ধি বিষয়ক এক সভায় অর্ধ শতাধিক কর্পোরেট নেতা, আন্তর্জাতিক সংস্থা, সরকার ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিতি ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ভিশনস্প্রিং-এর একটি সামাজিক উদ্যোগের আওতায় বিশ্বব্যাপী ৬০ লাখে বেশি মানুষের জন্য চশমাকে সুলভ্য করা হয়েছে। সভায় ‘ক্লিয়ার ভিশন’কে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবক হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সিভিডব্লিউ কর্মসূচির মাধ্যমে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের ১৮ হাজারেরও বেশি পোশাক শ্রমিক চশমা পেয়েছেন। চশমা ব্যবহারের এই শ্রমিকদের ৬২% জানিয়েছেন সূচে সুতা লাগানোর কাজটা তাদের জন্য আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়ে গেছে এবং ৭৯% জানিয়েছেন কর্মক্ষেত্রে হতাশাও অনেক কমে গেছে।
অনুষ্ঠানে ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট (ইউএসএআইডি)-এর মিশন ডিরেক্টর ডেরিক ব্রাউন বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের চোখের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও পরিচালনা পর্ষদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে রিডিং গ্লাস ও চিকিত্সক কর্তৃক সুপারিশকৃত চশমা বিতরণে ভিশনস্প্রিং ও তৈরি পোশাক খাত সোর্সিং ব্র্যান্ডগুলোর সহযোগী হয়েছে ইউএসএআইডি।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কর্মক্ষেত্রে চোখের ক্লিয়ার ভিশন নিশ্চিত করার মাধ্যমে অগ্রগতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি ভালো সুযোগ।’
ভিশনস্প্রিংয়ের সিইও এলা গুডউইন বলেন, বিশ্বের কমপক্ষে এক-চতুর্থাংশ শ্রমিকের চশমা ব্যবহার করা আবশ্যক। ঝাপসা চোখে সূচে সুতা লাগানো, ফেব্রিকের ত্রুটি খোঁজা, তাঁত চালানো কিংবা চায়ের কুঁড়ি সংগ্রহ করা সত্যিই বেদনাদায়ক। তবে সুসংবাদ হলো, ৭০০ বছরের পুরনো আবিষ্কার চশমা অস্পষ্ট দৃষ্টির সমাধান দেওয়ার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী কর্মীদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারে এবং উত্পাদনশীলতাও বাড়াতে পারে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক