মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

কাঠের সেতু ভেঙে পড়ল নদীতে দুর্ভোগে ৯ গ্রামের মানুষ

সাজ্জাদ হোসেন, নড়াইল

কাঠের সেতু ভেঙে পড়ল নদীতে দুর্ভোগে ৯ গ্রামের মানুষ

নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার নবগঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত কাঠের সেতু ভেঙে পড়েছে। প্রায় তিন মাস আগে একটি বালু কাটার ড্রেজার মেশিন নদীতে যাওয়ার পথে সেতুটিতে ধাক্কা লাগে। এরপর ধীরে ধীরে সেতুটি মাঝখান থেকে ভেঙে নদীতে পড়ে গেলেও দীর্ঘদিনেও মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পৌর এলাকাসহ লোহাগড়া উপজেলার অন্তত ৯ গ্রামের মানুষের পারাপারে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, নবগঙ্গা নদীর উত্তর পাড়ে চোরখালী ও দক্ষিণ পাড়ে কচুবাড়িয়া গ্রাম। এ ছাড়া উভয় পাড়ের জয়পুর, গোফাডাঙ্গা, ধোপাদহ, বাহিরপাড়া, নারানদিয়া, পুরুলিয়া ও রামপুরসহ ৯ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ এ নদীর ওপর দিয়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। জনগুরুত্ব বিবেচনায় লোহাগড়া পৌর কর্তৃপক্ষ ২০০৮ সালে চোরখালী-কচুবাড়িয়া পয়েন্টে নদীর ওপর লোহার কাঠামো ও কাঠের পাটাতনের তৈরি একটি সেতু নির্মাণ করে। এটি প্রায় ৪০০ ফুটের মতো দৈর্ঘ্য। এটি নির্মাণের পর পৌরবাসী স্বল্প দূরত্বে অল্প খরচে দ্রুত জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে পারেন। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে যাতায়াত করত। কিন্তু চলতি বছরের জুনের শেষ দিকে রাতের অন্ধকারে বালু ব্যবসায়ীরা তাদের ড্রেজার মেশিন নিতে গিয়ে সেতুটিতে ধাক্কা দিলে মাঝ বরাবর নদীতে ভেঙে পড়ে। এরপর থেকেই এ পথের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর মাঝখানে প্রায় ১০০ ফুটের মতো অংশ ভেঙে নদীর মধ্যে ঝুলে আছে। ওই অংশের লোহার খুঁটিগুলো ভাঙা, কাঠের পাটাতনও ভাঙা। আর অন্য অংশেও লোহার খুঁটি ও কাঠামো নড়বড়ে অবস্থা ।এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল শেখ বলেন, ‘৯ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় পৌর কর্তৃপক্ষ প্রায় ১৪ বছর আগে এই কাঠের সেতু নির্মাণ করে। এ সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করত স্থানীয়রা। চলতি বছর জুনে বালু কাটা খননযন্ত্রের ধাক্কায় সেতুটি বিধ্বস্ত হয়। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় ৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে শহরে যেতে হয়। এভাবে ১ মিনিটের পথ ঘুরে যেতে সময় লাগছে এক ঘণ্টা। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এই ৯ গ্রামের মানুষ।’ এ প্রসঙ্গে পথচারীরা বলেন, সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে গত তিন মাসেও বিধ্বস্ত সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই কোমলমতি শিশু-কিশোরদের পাশাপাশি এলাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য ও গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। জানতে চাইলে লোহাগড়া পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মসিয়ুর রহমান জানান, ‘সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়ে তিনি অবগত হয়েছেন। তবে এ মুহূর্তে সেতু মেরামতের পরিবর্তে স্থানীয় এমপি মাশরাফি বিন মর্তুজার সঙ্গে কথা বলে স্থায়ী কংক্রিটের সেতু নির্মাণের কথা ভাবছেন বলেও জানান তিনি।’

সর্বশেষ খবর