রবিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সংক্ষিপ্ত

পানের দোকান করে সংসার চালাচ্ছে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে জীবনযুদ্ধে অসুস্থ পিতার পানের দোকানে সহযোগিতা করছে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রাফিয়া সুলতানা (১৪)। রাফিয়ার পিতা রফিকুল ইসলাম (৫৮) জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের মোল্লাটোলা গ্রামের বাসিন্দা হলেও সর্বনাশা পদ্মা নদীর ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে নাচোলের মুরাদপুরে ভাড়া জায়গায় বসবাস করছেন। এদিকে জীবন ধারণের জন্য রফিকুল ইসলাম নাচোল বাসস্ট্যান্ডে ইসলামিয়া হোটেলের সামনে পানের দোকান দিয়ে চার মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। সম্প্রতি স্ট্রোকে অক্রান্ত হন তিনি। পরে মেয়েদের সহযোগিতায় কিছুটা সুস্থ হলেও বাধ্য হয়ে স্কুলের লেখাপড়া শেষে অসুস্থ পিতাকে সহযোগিতা করতে পিতার পানের দোকানে দুই বেলা বসতে হচ্ছে ছোট মেয়ে রাফিয়া সুলতানাকে।

মা-বাবার ছোট মেয়ে রাফিয়া সুলতানা নাচোল খুরশেদ মোল্লা সরকারি উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে। রাফিয়ার কোনো ভাই নেই। সংসারে তারা চার বোন। এর মধ্যে বড় বোন রাফিজা সুলতানা বিবাহিত। তবুও সে মেধা ও অদম্য মনোবল নিয়ে স্বামী ও পিতার আশ্বাসে গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়ো টেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ালেখা করছেন। মেজো বোন ফাওজিয়া খাতুন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে বিএসসি পড়ছেন। সেজো বোন রিজিয়া সুলতানা এ বছর নাচোল খুরশেদ মোল্লা সরকারি উচ্চবালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে নাচোল মহিলা কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হয়েছেন। এ বিষয়ে ছোট মেয়ে রাফিয়া সুলতানা বলেন, মেয়েদের লেখাপড়া ও সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তার পিতা রফিকুল ইসলাম। তাই বাধ্য হয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি অসুস্থ পিতাকে পান দোকানে নিয়মিত সহযোগিতা করে আসছে ছাত্রী রাফিয়া। জীবন সংগ্রামী কিশোরী রাফিয়া সুলতানা পিতাকে ছেলের অভাব বুঝতে দিতে চায় না। তাই পান দোকানে সহযোগিতা ও মনোবল জুগিয়ে সেও ভালো ফলাফল করে ভালো মানুষ হতে চায়। অসুস্থ পিতাকে সহযোগিতা করতে জীবন সংগ্রামে নেমেছে কিশোরী রাফিয়া সুলতানা। রফিকুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে ছোট মেয়ে রাফিয়া আমাকে ছেলের মতো করে পানের দোকানে সহযোগিতা করছে। পান দোকানের আয় দিয়েই এখন আমার সংসার ও চিকিৎসা চলছে।

সর্বশেষ খবর