শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

বন্ধ হচ্ছে না ফসলি জমির বালু তোলা

ভেঙে পড়ছে বাড়িঘর ♦ হুমকিতে সেতু-কালভার্ট

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

বন্ধ হচ্ছে না ফসলি জমির বালু তোলা

কৃষিজমির বালু তুলে স্তূপ করে রাখা হয়েছে

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে কৃষি জমি থেকে বালু তোলা কিছুতেই থামছে না। ভ্রাম্যমাণ আদালত, জেল-জরিমানা এমনকি মামলা করেও বন্ধ করা যাচ্ছে না অবৈধ বালু তোলা। বালু নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঘটছে সংঘর্ষ। নষ্ট হচ্ছে কৃষি জমি ও গ্রামীণ সড়ক। ভেঙে পড়ছে ছড়ার পাড়ের ঘরবাড়ি। হুমকিতে রয়েছে সেতু কালভার্ট। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, অবৈধভাবে বালু তোলায় চার ইউনিয়নের ২৩ হেক্টর ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। এদিকে সিন্দুরখান ইউনিয়নের বালু তোলা বন্ধে গত ৫ মে এলাকাবাসীকে নিয়ে বৈঠকের পর ইউএনও-অ্যাসিল্যান্ডের সামনেই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের দুই নেতা বাগবিতন্ডায় জড়ান। এর একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ ছাড়া বালু নিয়ে ২৯ এপ্রিল ভূনবীরে সংঘর্ষে একজনের ডান হাত প্রায় বিছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় আহত হন আরও দুজন। একই দিন রাতে মির্জাপুরে বালু তোলা নিয়ে বিরোধে সাবেক ইউপি সদস্য আছকির মিয়ার দুই হাত ভেঙে  ফেলেছে প্রতিপক্ষ। এর আগে গ্রামীণ সড়কে বালু পরিবহনের বাধা দেওয়ায় ৫ এপ্রিল সিন্দুরখান ইউপি সদস্য নোহেল আহম্মেদের ওপর হামলা হয়েছে। এ তিনটি ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। জানা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলায় একটি সাধারণ বালু ও ২৮টি সিলিকা বালুসহ ২৯টি বালুমহাল রয়েছে। ২০২১ সালে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে শ্রীমঙ্গলের ২০টিসহ মৌলভীবাজার জেলার ৩৯টি সিলিকা বালু কোয়ারী ইজারা অনুমোদনের জন্য খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো কার্যালয়ে। ১৪ এপ্রিল খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো শুধু সুইনছড়া কোয়ারীর ইজারা অনুমোদন দেয়। কিন্তু বালু ব্যবসায়ীরা বছরের পর বছর অবৈধভাবে উপজেলার মির্জাপুর, ভূনবীর, অশিদ্রোন, কালাপুর, সিন্দুরখান, সদর ইউনিয়নে পাহাড়ি ছোটবড় ছড়া ও ফসলি জমি থেকে বালুু  তোলছে। কোনো কোনো ছড়া ও কৃষি জমির তলদেশ থেকে মেশিন দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। উপজেলা ভূমি অফিস সূত্র জানায়, এক বছরে কালাপুর, মাইজদি, উত্তরসুর, সাতগাঁও বাজার, সাতগাঁও চৌমুহনা, সিন্দুরখান সড়ক, খিলগাঁও, কামারগাঁও, শ্রীগাঁও, গুলগাঁও, ইসলামপাড়া, ভিমসী, নতুন বাগান, জৈতাছড়া, বৌলাশীর, শহশ্রী ও রায়পরাণ গ্রামে অবৈধভাবে তোলা ৬১ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করা হয়েছে। এসব বালু নিলামে বিক্রি করে ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে। এ সময় অবৈধ বালু তোলার আপরাধে ১৪টি মোবাইল কোর্টে ৭ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সন্দ্বীপ তালুকদার বলেন, আমরা যখনই খবর পাচ্ছি সঙ্গে সঙ্গে অভিযানে যাচ্ছি। এ অভিযান আরও জোরদার করতে হবে।

সর্বশেষ খবর