শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভেস্তে গেছে সমলয় চাষাবাদের লক্ষ্য

♦ একসঙ্গে পাকেনি ধান ♦ যন্ত্রের পরিবর্তে কাটা হচ্ছে হাতে

নওগাঁ প্রতিনিধি

ভেস্তে গেছে সমলয় চাষাবাদের লক্ষ্য

আগে পেকে যাওয়া ধান কেটে নিচ্ছেন কৃষক

অবহেলা আর অনিয়মে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় ভেস্তে যেতে বসেছে কৃষিবিভাগের প্রণোদনার আওতায় সমবায়ভিত্তিক কৃষি যান্ত্রিকীকরণ সমলয় চাষাবাদ। এখানে দুই ধরনের চারা রোপণ করায় এক জাতের আগে অন্য জাতের ধান পেকে যাওয়ায় সেগুলো আগেই কাটা শুরু হয়েছে। যন্ত্রের পরিবর্তে চাষিরা এগুলো কাটছেন হাতে কাস্তে নিয়ে। ফলে যান্ত্রিকীকরণের মূল লক্ষ্যই ব্যাহত হয়েছে। গচ্চা যেতে বসেছে এই প্রদর্শনীর জন্য বরাদ্দ টাকা। কর্তৃপক্ষ বলছে আগেই ধান পাকা ও কাটার বিষয়ে কৃষকরা তাদের কিছু জানাননি। সংশ্লিষ্টরা জানান, বোরো মৌসুমে শ্রমিক সংকটে সময়মতো ধান কাটতে না পারায় চাষিদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে মাঠেই বিনষ্ট হয় সোনালি ফসল। এ সমস্যা নিরসনে কৃষি বিজ্ঞানীরা একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। এ পদ্ধতির নাম সমবায়ভিত্তিক সমলয় চাষাবাদ। যেখানে একটি মাঠে বা মাঠের একটি অংশের সব কৃষক একসঙ্গে একই জাতের ধান একই সময়ে যন্ত্রের মাধ্যমে রোপণ করবেন। এ পদ্ধতিতে বীজতলা থেকে চারা তোলা, চারা রোপণ ও ধান কর্তন সব প্রক্রিয়া যন্ত্রের সাহায্যে একই সময়ে করা হবে। সমলয়ে ধান আবাদ করতে হলে চারা তৈরি করতে হবে ট্রেতে। এ পদ্ধতিতে ধান চাষে সময়, শ্রম ও খরচ কম লাগবে। চলতি বোরো মৌসুমে সরকার দেশের ৬১ জেলায় মোট ১১০টি সমলয় চাষাবাদের প্রদর্শনী স্থাপনের জন্য ১৫ কোটি ৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। এর মধ্যে মহাদেবপুর উপজেলায় বরাদ্দ করা হয় ১৩ লাখ ৭০ হাজার ৫০০ টাকা। সদর ইউনিয়নের বকাপুর মাঠে ৫০ জন চাষির ৫০ একর জমি নিয়ে তৈরি করা হয় প্রদর্শনী খেত। নিয়মানুযায়ী একরপ্রতি ২ কেজি করে হাইব্রিড জাতের ধানের বীজ কিনে ট্রে তৈরি করে বীজ বপন করা হয়। কিন্তু নিম্নমানের বীজ ব্যবহার করায় অর্ধেক চারা নষ্ট হয়। ফলে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের সাহায্যে প্রদর্শনীর অর্ধেক খেতে রোপণ করতেই চারা শেষ হয়ে যায়। বাকি অর্ধেক জমির মালিকরা নিজের টাকায় স্থানীয় জাতের ধানের চারা কিনে নিজেরাই রোপণ করেন। বীজ কেনার জন্য একরপ্রতি ১ হাজার ৫৬০ টাকা, বীজতলা তৈরির জন্য ২ হাজার টাকা, বীজতলার পরিচর্যার জন্য ২ হাজার টাকা, আর রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের সাহায্যে রোপণের জন্য ৩ হাজার টাকা করে বরাদ্দ থাকলেও তাদের তা দেওয়া হয়নি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী জানান, কুয়াশায় ট্রেতে তৈরি বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে প্রকল্পে কোনো অনিয়ম হয়নি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, অর্ধেক জমির ধান আগে যাওয়ার কথা তিনি জানেন না।

সর্বশেষ খবর