লালমনিরহাটে গোখাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দফায় দফায় বন্যার কারণে খড় পচে যাওয়ায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে জেলার দেড় শতাধিক চরের গবাদিপশু পালনকারী কৃষক বড় সংকটে পড়েছেন। এ কারণে অনেক কৃষক গবাদিপশু কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন। কৃষি বিভাগ বলছে, চরের কৃষকরাই সবচেয়ে বেশি গো-খাদ্য সংকটে পড়েছেন। অন্য জায়গাতেও সংকট রয়েছে, তবে অপেক্ষাকৃত কম। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গবাদিপশু পালন করতে গো-খাদ্য মজুদ রাখতে হয়। কিন্তু এবার বন্যায় গো-খাদ্য (পোয়াল) পচে যাওয়ায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। এখন বিভিন্ন জায়গা থেকে তা সংগ্রহ করা হচ্ছে। অনেক বেশি টাকা দিয়ে তা কিনতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বড় খামারিরা গরুর জন্য সবুজ ঘাস লাগালেও ক্ষুদ্র খামারিরা শুকনো খড়ের ওপর নির্ভর করেন। চর খাটামারী গ্রামের ক্ষুদ্র খামারি এস এম হাসান আলী জানান, গরুর জন্য যে খড় রাখা হয়েছিল, তা পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন খড় কিনে খাওয়াতে হচ্ছে। একটা গরুর এক দিনের খড় কিনতে ৪০-৫০ টাকা লাগে। চর রাজপুরের কৃষক আয়নাল হক বলেন, দেড় মাস ধরে খড় কিনে চারটি গরু পালন করেছি। এখন আর পারছি না। খড়ের দাম বেশি, পাওয়াও যাচ্ছে না ঠিকমতো। বাধ্য হয়ে দুটি গরু বিক্রি করে দিয়েছি। বাকি দুটি রাখতে পারব কি না তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছি। ফুলগাছ গ্রামের হযরত আলী জানান, মাঠে ধান থাকায় গরু নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এ ছাড়া ধানের গুঁড়া, ভুসি ও ভুট্টার গুঁড়ার দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। এ সময় শুকনো খড়ই ক্ষুদ্র খামারিদের একমাত্র ভরসা। তবে, বন্যা আর অতিবৃষ্টির কারণে শুকনো খড়েরও সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
খড় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ সময় খড়ের চাহিদা একটু বেশি থাকে। বিভিন্ন এলাকা থেকে শুকনো খড় পাইকারি কিনে বাজারে খুচরা বিক্রি করছি। একটি আঁটি ৩ টাকা করে কিনে ৪ থেকে ৫ টাকা বিক্রয় করছি। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ হামিদুর রহমান বলেন, বন্যা আর অতিবৃষ্টির কারণে খড়ের সংকট হয়েছে। কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমরা পরামর্শ দিয়েছি বিভিন্ন জাতের ঘাস যেন সব কৃষক চাষাবাদ করেন। তাহলে আপৎকালে সেগুলো কাজে লাগাতে পারবেন তারা।