চার বছরেও শেষ হয়নি কুমিল্লা মহানগরীর কান্দিখালের সম্প্রসারণ কাজ। সামনে বর্ষা মৌসুম। খাল খনন সম্পন্ন না হলে নগরীতে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এতে নগরী পানিতে ডুবে যেতে পারে। এ ছাড়া উদ্ধার হওয়া অংশ খননের আওতায় না আনলে তা আবারও দখল হয়ে যেতে পারে। সিটি করপোরেশন সূত্র বলছে, উচ্ছেদের পর রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণের কাজ চলছে। তবে খননের বিষয়টি বর্ষার আগে শেষ করা যাবে কি না এখনো নিশ্চিত নয়।
সূত্র জানান, ২০২১ সালের জুলাইয়ে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে কান্দিখাল উদ্ধারের ঘোষণা দেয় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন। কান্দিখাল দখলকারী ৩৬ ব্যক্তি, চার সরকারি ও এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে তা উদ্ধার করা হয়। তবে ওই অংশের সম্প্রসারণ ও খননকাজ চার বছরেও শুরু হয়নি।
কান্দিখাল নগরীর উত্তর চর্থার নওয়াববাড়ি চৌমুহনী থেকে নোয়াগাঁও চৌমুহনী হয়ে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলায় পুরাতন ডাকাতিয়া নদীতে মিশেছে। প্রায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ খালের সিএস নকশা অনুযায়ী কোনো কোনো স্থানের প্রস্থ ৪৫ থেকে ৯৫ ফুট পর্যন্ত। নগরীর মনোহরপুর থেকে কান্দিরপাড় পর্যন্ত এ খালের শাখা রয়েছে। কিন্তু দখলদারদের কবলে পড়ে এ খালের কোনো কোনো অংশ ৮ ফুট প্রস্থের সরু নালায় পরিণত হয়েছে। খালের বেশির ভাগ অংশে প্রস্থ আছে ১০-১৫ ফুট। খালের প্রস্থ নগরীর টমছমব্রিজ মোড়ে ৭৯ ও নোয়াগাঁও মোড়ে ৯৫ ফুট থেকে কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৫ থেকে ২০ ফুটে।
নগরীর রফিকুল ইসলাম সোহেল বলেন, কান্দিখালের নামে কান্দিরপাড়ের নামকরণ। একসময় নৌকা চলাচল করত এ খালে। কুমিল্লাকে ব্যাংক ও ট্যাংকের শহর বলা হয়। দিনদিন পুকুর ভরাট হচ্ছে, খাল ভরাট হচ্ছে। জলাবদ্ধতামুক্ত নগরীর জন্য নাগরিক ও নগর কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সদস্য মোহাম্মদ আনিসুর রহমান আখন্দ বলেন, নগরীর প্রধান খাল কান্দিখাল। এটি দিয়ে নগরীর অধিকাংশ পানি ও বর্জ্য অপসারণ হয়। এর সম্প্রসারণ ও খনন জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর হলে দ্বিতীয়বার সাহস করবে না।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সায়েম ভুঁইয়া বলেন, কান্দিখালের টমছমব্রিজ থেকে নোয়াগাঁও চৌমুহনী পর্যন্ত ৪১টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখন রিটার্নিং ওয়ালের কাজ চলছে। দ্রুত আমরা খননেও যাব।