গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী হিন্দু তীর্থস্থান ভরতখালী কাষ্ঠ কালী মন্দিরে চলছে মাসব্যাপী বৈশাখী পূজা ও মনোবাসনা পূরণের মেলা শুরু হয়েছে। হাজারো ভক্তের আগমন এবং নানান আয়োজনে মুখরিত হয়ে উঠেছে মন্দির এলাকা। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভক্ত-পুণ্যার্থীদের পদচারণে মুখর ভরতখালী কাষ্ঠ কালী মন্দির প্রাঙ্গণ। প্রতি বৈশাখ মাসের প্রথম শনিবার থেকে শুরু হয়ে মাসজুড়ে চলে পূজা-অর্চনা ও মেলা। জানা যায়, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, দেবী কালী মায়ের কাছে বলিদান ও পূজা অর্চনা করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। প্রায় ৩০০ বছর আগে যমুনা নদী থেকে ভেসে আসা এক কাঠখণ্ডের অলৌকিক ঘটনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত এই মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে নানা কিংবদন্তি।
স্থানীয়রা জানান, তৎকালীন জমিদার রমণী কান্ত রায় স্বপ্নাদেশ পেয়ে কাঠখণ্ডটি পূজা করেন এবং সেখান থেকেই এটি কালী মূর্তিতে পরিণত হয়। ভক্তদের মধ্যে কেউ রোগমুক্তি, কেউ বিপদ থেকে রক্ষার জন্য, আবার কেউ সন্তানের জন্য মানত করে এই মন্দিরে আসেন। ভক্তরা মোমবাতি, আগরবাতি ও ধূপ জ্বালিয়ে দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন এবং প্রার্থনার শেষে ভোগ নিবেদন করেন। অনেকে পাঠা বলিও দেন। এদিকে মন্দিরের পাশে পাকুর তলার বিস্তৃত প্রায় ৭ একর এলাকাজুড়ে বসেছে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ মেলা। মেলায় রয়েছে বাহারি খাবার, দই, বাতাসা, সন্দেশ, বাঁশ ও মাটির তৈজসপত্র, খেলনা, হাতপাখা ও নানা হস্তশিল্প। এতে যোগ দিয়েছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা হাজারো দর্শনার্থী ও পুণ্যার্থী। মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি রনজিৎ কুমার চন্দ্র বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে এই দায়িত্ব পালন করছি। আশাকরি, সুষ্ঠুভাবে মেলা চলবে এবং ভক্তদের উপস্থিতি আরও বাড়বে।’ তিনি বলেন, ‘মেলায় আগত হাজারো মানুষের নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।