নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা ভুগছেন সুপেয় পানি সংকটে। পানির কষ্টসহ নানা সমস্যা এবং কাছাকাছি কর্মসংস্থান না থাকায় অনেক উপকারভোগী ছাড়ছেন আশ্রয়ণের ঘর। বর্তমানে এখানকার ৩৫০ ঘরের ১২০টিই ফাঁকা পড়ে আছে।
গৃহহীনদের জন্য খালিয়াজুরী উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩৫০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়। প্রতি ৫-৬টি ঘর মিলিয়ে একটি করে টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়। কোথাও কোথাও টিউবওয়েলের অস্তিত্বই নেই। আবার কোথাও থাকলেও কোনোভাবে সচল রয়েছে। এগুলো প্রায়ই অকেজো হয়ে পড়ে। তখন হতদরিদ্র মানুষ নিজেদের টাকায় ঠিকঠাক করে কাজ চালিয়ে নেন।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রভাত দাস বলেন, ‘দিনমজুর মানুষ আমি। ঘর পেলেও পানির ব্যবস্থা নেই। কলগুলো ব্যয়বহুল হওয়ায় ঠিকও করানো যায় না।’ রিনা রানী দাস বলেন, ‘ঘরগুলো অনেক দূরে ধনু নদীর পাড়ে। আমরা সব মানুষ থেকে বিছিন্ন। কাজ করে জীবন চলে। দূরে গিয়ে কাজ করতে হয়। এ কারণে অনেকে আশ্রয়ণের ঘরে থাকেন না।’ জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে গেছে। যে টিউবওয়েলগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো পানি পর্যন্ত পৌঁছেনি। এখানে পানি পেতে হলে সাবমার্সিবল ছাড়া উপায় নেই। এখন সাবমার্সিবল টিউবওয়েল পাওয়া সহজ না। এক উপজেলায় হয়তো ১০০ সাবমার্সিবল বরাদ্দ আসে। ইউনিয়নভিত্তিক বরাদ্দ দেওয়া যায়। তার পরও আমরা চেষ্টা করব পানির সমস্যা সমাধান করতে। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, দরিদ্র মানুষদের শুধু ঘর দিলেই হয় না, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে হয়। কাজের সুযোগ না থাকায় অনেকে আশ্রয়ণের ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো ভাড়া দেওয়ার সুযোগ নেই। এক-দুজন চলে গেলে কেবল তার পরিবর্তে স্বজনরাই থাকতে পারবেন। কেউই থাকেন না- এমন অভিযোগ পেলে বরাদ্দ বাতিল করে প্রয়োজনে অন্যদের দেওয়া হবে।