নাটোরের সিংড়ায় রাস্তায় জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে কোমলমতি শিশুসহ শিক্ষার্থী ও বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ। বর্ষাকাল এলেই ওই পথে কোমর সমান পানি জমে যায়। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ওই পানি মাড়িয়েই স্কুল ও মাদরাসায় যাওয়া-আসা করতে হয়। প্রতিদিন ভিজে যায় শিশুদের জামা-কাপড়, বই-খাতা। ঘটে দুর্ঘটনা, রয়েছে প্রাণহানির ঝুঁকিও।
জেলার সিংড়া উপজেলার ইটালি ইউনিয়নের শালমারায় ৫০০ গজ দীর্ঘ ওই পথে এই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত শালমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শালমারা ধামাইচ ইসলামিয়া সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীরা এই ভোগান্তি পোহাচ্ছে। ওই বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটিতে কোমর পরিমাণ পানি জমে থাকে। ফলে শিশুদের নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে পৌঁছানো যেমন কষ্টকর হয়ে উঠেছে, তেমনি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঝুঁকিও রয়েছে।
শিক্ষকরা জানান, শিশু শ্রেণি ও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ভেজা পোশাক আর স্যাঁতসেঁতে বই-খাতা নিয়ে ক্লাসে উপস্থিত হয়। অনেকে পথে পড়ে যায় পানিতে। অভিভাবক রহিমা বেগম বলেন, কোমর পানি জমে রয়েছে রাস্তার ওপর। আমাদের ছেলেমেয়েদের জীবনের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও স্কুলে পাঠাতে হচ্ছে। রাস্তাটি দু-তিন ফুট উঁচু করা হলে এমন কষ্ট হতো না। স্থানীয় বাসিন্দারাও অভিযোগ করে বলেন, এটি স্কুল, মাদরাসা ও এলাকার সাধারণ মানুষের একমাত্র চলাচলের পথ। দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তায় সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি। স্থানীয় প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়ে এলাকাবাসী বলেন, শিশুদের ভবিষ্যৎ ও এলাকার স্বাভাবিক জনজীবনের স্বার্থে এই রাস্তা দ্রুত সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রাব্বানী জানান, শালমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটি এতটাই নিচু যে সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায়। এখন বর্ষার শুরু থেকেই পুরো রাস্তায় কোমর পানি জমে আছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন পানির মধ্য দিয়ে যাতায়াত করছে, যা কেবল দুঃখজনক নয়, অত্যন্ত বিপজ্জনকও। এতে শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসার আগ্রহ কমে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে এবং নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখতে আমরা দ্রুত রাস্তাটি দুই থেকে তিন ফুট উঁচু ও সংস্কার করার দাবি জানাচ্ছি। সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারলাম, এলাকাবাসী অথবা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিখিত আবেদন দিলে সরেজমিনে দেখে দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।