নেত্রকোনায় গত ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ১৪ মাসে জেলায় ১৭৯টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল সূত্রে পাওয়া তথ্য মতে, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে ১১টি, ফেব্রুয়ারি মাসে ৭টি, মার্চ মাসে ১৪টি, এপ্রিল মাসে ১২টি, মে মাসে ৯টি, জুন মাসে ১৭টি, জুলাই মাসে ১১টি, আগস্ট মাসে ২২টি, সেপ্টেম্বর মাসে ১০টি, অক্টোবর মাসে ১৮টি, নভেম্বর মাসে ১১টি, ডিসেম্বর মাসে ১৭টি, ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ৯টি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ১১টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসকল মৃত্যুর মধ্যে বেশিরভাগ মৃত্যু অস্বাভাবিক এবং সড়ক দুর্ঘটনা। এছাড়া অস্বাভাবিক মৃত্যুর মধ্যে রয়েছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা, বিষপানে আত্মহত্যা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু এবং পানিতে ডুবে মৃত্যু। সচেতন বিশ্লেষকদের মতে, অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়েও অনেক বেশি। অনেক সময় নিভৃত পল্লী এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা, পানিতে ডুবে মৃত্যু, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কেউ মারা গেলে পুলিশি হয়রানী কিংবা ময়নাতদন্তে কাঁটাছেড়ার ভয়ে প্রশাসনকে না জানিয়ে অথবা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি সাপেক্ষে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করায় তা সরকারি হিসাবে নথিভুক্ত হয় না।
জনউদ্যোগ ফেলো সিনিয়র সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল বলেন, পারিবারিক অসন্তোষ, টাকা পয়সার লেনদেনসহ নানা কারণে কিছু আত্মহত্যাসহ অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এগুলোর সঠিক তদন্ত না হওয়া বিচার কার্জ বিলম্বিত হওয়ার কারণে প্রকৃত চিত্রটি উঠে আসছে না। সড়ক দূর্ঘটনার জন্য দায়ী আমাদের সরকার এবং জেলার ট্রাফিক সিস্টেম ভংগুর থাকায় নিত্য এসকল দুর্ঘটনা ঘটছে। এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের কোনো নজর নেই।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনারোধ কল্পে জেলা আইন শৃংখলা সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী এপ্রিল মাস থেকে অদক্ষ চালকদেরকে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। কোনো চালককে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার পূর্বে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের ভাল করে যাচাই বাছাই করে দেয়া উচিত। সেই সঙ্গে প্রতিটি গাড়ির মালিকপক্ষকেও দেখে শুনে চালক নিয়োগ দেয়াসহ অন্তরিকতার সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও পুলিশ বিভাগ সড়ক দুর্ঘটনার পরপরই মামলা নিচ্ছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৭ মার্চ, ২০১৬/ রশিদা