লক্ষ্মীপুরের রামগতির মেঘনা নদীর চর আব্দুল্লাহ পয়েন্টে ৫টি মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসময় ৫ জেলেকে অপহরণ করেছে ডাকাত দলের সদস্যরা। পরে অপহৃত ৫ জেলের মধ্যে ৩ জনকে উদ্ধার করা হলেও আরো ২ জন এখনো পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে জেলে সম্প্রদায়ের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। জেলেরা বলছেন প্রতিনিয়ত ওই রুটে ডাকাতদের হামলার শিকার হন তারা। মুক্তিপণ দিয়ে অনেকে ছাড়া পেলেও চিহ্নিত ডাকাতদের ভয়ে মুখ খুলেননা কেউ। তবে পুলিশ বলছে অভিযান অব্যাহত রয়েছে, জলদস্যুদের গ্রেফতার করার পর তারা জামিনে বের হয়ে আবার ডাকাতি শুরু করে বলে দাবি তাদের।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত ২৪ আগষ্ট রাত ১১ টায় লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআবদুল্লাহ পয়েন্টে মেঘনা নদীতে জেলেদের মাছ ধরার ট্রলারে হামলা চালিয়েছে ১০/১২ জনের জলদস্যুরা। এসময় ৫টি ট্রলারে ২০/২৫ জন জেলে ছিল। এদের মধ্যে নদীতে লাফিয়ে পড়ে হামলা থেকে অনেকে রক্ষা পান। তবে বাবুল, মুরাদ, আলা উদ্দিন, আব্বাছ ও নুরুল ইসলাম মাঝি আটকা পড়েন ডাকাতদের হাতে। এসময় তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে নিয়ে ডাকাতরা মারধর করে। পরে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী পুলিশের অভিযানে ৩ জেলেকে স্থানীয় চর আফজাল এলাকা থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। কিন্তু অপহৃত আব্বাছ ও নুরুল ইসলাম মাঝি এবং একটি ট্রলার এখনো পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। একই সাথে ঘটনার সাথে জড়িত কোন ডাকাতকেও আটক করতে পারেনি পুলিশ।
রামগতির আলেকজান্ডার এলাকার বেশ কয়েকজন জেলে অভিযোগ করে বলেন, প্রতিনিয়ত মাছ ধরতে গেলে অস্ত্রধারী ডাকাতরা তাদের ট্রলারে হামলা চালায়। এসময় তাদের কাছ থেকে জাল, ট্রলার, টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা। আবার জেলেদের অপহরণের পর বিকাশের মাধ্যমে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পর ছেড়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন অনেকে।
স্থানীয় এলাকাবাসী মোশারফ হোসেন ও মেজবাহ উদ্দিন ভিপি হেলালসহ অনেকে জানান, আলেকজান্ডার সেন্ট্রাল খাল, চর আব্দুল্লাহ, উছখালি, ভয়ারচর, রামগতির মাছ ঘাট, টাংকির ঘাট এলাকার এই নৌ রুটে প্রতিনিয়িত ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসব স্থানে যারা ডাকাতি করে তারা সবাই চিহ্নিত ডাকাত, এখানকার জেলেরা মুক্তিপণ দিয়েও প্রাণ ভয়ে মুখ খুলছেনা। এ রুটে ডাকাত নির্মূল করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সচেতন মহল।
এ দিকে রামগতি থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) হুমায়ুন কবির জানান, ৫টি ট্রলারে ডাকাতির পর অপহৃত ৫ জেলের মধ্যে ৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। অপহৃত দুই জেলে ও একটি ট্রলার এখনো পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এই নৌ রুটে প্রতিনিয়ত ডাকাতির ঘটনা ঘটছে স্বীকার করে চিহ্নিত ডাকাত মজনু, নিজাম, খোকন, ওয়াহেদসহ অন্যান্য ডাকাতরা জড়িত রয়েছে বলে জানান তিনি। এদের কেউ কেউ জেল হাজতে আছে আবার কেউ জামিনে বের হয়ে ডাকাতি করছে এখন। পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানালেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
বিডি প্রতিদিন/ ২৬ আগস্ট ২০১৬/ সালাহ উদ্দীন