চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মোঃ নজরুল ইসলামকে বিস্ফোরক মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। এদিকে নির্বাচিত হওয়ার ১০মাস পর হাইকোর্টের নির্দেশে আজ মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
জানা গেছে, গত ২০১৫ সালের ৩০ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মোঃ নজরুল ইসলাম হত্যা ও নাশকতাসহ ১৮ মামলার পলাতক আসামি থাকা অবস্থায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মেয়র নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তিনি আদালতে আত্মসর্মণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারগারে পাঠায়।
পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে প্যারোলে মুক্তিলাভ করে মেয়র হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। কিন্তু তার নামে দায়েরকৃত মামলাগুলোর চার্জশীট আদালতে গৃহীত হওয়ায় আইন ও বিধি অনুযায়ী স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে মেয়রের পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। এরপর ১৪ মার্চ বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানকারী ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র (১) মোঃ সাইদুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেয়।
পরে বরখাস্তকৃত মেয়র ও জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মোঃ নজরুল ইসলাম এই বরখাস্ত আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রীট মামলা দায়ের করে। রায়ে হাইকোর্ট বরখাস্ত আদেশ বাতিল করে তাকে স্বপদে বহালের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশ দেন। প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অধ্যক্ষ মোঃ নজরুল ইসলামের বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়রে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও ভারপ্রপ্ত মেয়রকে নির্দেশ দেন।
নির্দেশ মোতাবেক সকাল সাড়ে ১০টায় ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ সাইদুর রহমানের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যক্ষ মোঃ নজরুল ইসলাম। দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই সদর মডেল থানার বিপুল সংখ্যক পুলিশ মেয়রকে গ্রেফতারের জন্য পৌর ভবন ঘেরাও করে মেয়রকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে বেলা সোয়া ১টার দিকে মেয়র তার চেম্বার থেকে বেরিয়ে এসে গাড়িতে উঠলে পুলিশ জানায় তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে।
এসময় তার আইনজীবী পুলিশকে জানান, ওই মামলায় আত্মসর্মণের জন্য তিনি আদালতে যাচ্ছেন। পরে তিনি পুলিশ প্রহরায় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল অধিকারী’র আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত শুনানী শেষে জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সদর মডেল থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, গত ১আগস্ট গভীর রাতে সদর মডেল থানা পুলিশ সদর উপজেলার বারঘরিয়া ইউনিয়নের চামাগ্রাম মন্ডলপাড়ায় নাশকতা চালানোর গোপনসভা করার সময় বিপুল সংখ্যক ককটেল ও আধাকেজি গান পাউডারসহ জামায়াত-শিবিরের ২১ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে। পরে ওই ঘটনায় ২৩জন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪০-৫০জনকে আসামী করে এসআই আমিনুল ইসলাম বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার নামীয় আসামী মেয়র জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মোঃ নজরুল ইসলাম।