ইসলামী ব্যাংক চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখা ম্যানেজারের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের তথ্য প্রকাশ করায় ওই ব্যাংকে কর্মরত মইদুর রহমান নামে এক কর্মচারী চাকরি হারিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ম্যানেজার (ভিপি) মো. সাইফুল হক।
অভিযোগে জানা গেছে, ওই ব্যাংকে কর্মরত ক্যাশিয়ার নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার মুন্দিখৈর গ্রামের মইদুর রহমান (৩৫), ম্যানেজার সাইফুল হক ও তার ভাই আলহাজ্ব মো. সইবুর রহমান যোগসাজসে হুন্ডি ব্যবসা করে আসছেন। কিন্তু ক্যাশিয়ার মইদুর রহমান এ নিয়ে ব্যাংক মানেজার মো. সাইফুল হককে সতর্ক করলে ব্যাংক ম্যানেজার ক্ষিপ্ত হন এবং ওপরে প্রভাব খাটিয়ে মইদুর রহমানকে চলতি বছরের ১ ফেব্রয়ারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন।
মইদুর রহমান জানান, গত বছর ২১ সেপ্টেম্বর নাচোল পৌরসভা এলাকায় ২.৮৮ কাঠা জমি রেজিষ্ট্রির জন্য বন্ধু মোমিনের চেকের বিপরীতে ম্যানেজার সাইফুল হকের অনুমতিক্রমে ব্যাংক হতে ১০ লাখ টাকা নেন মইদুর। সন্ধ্যার মধ্যে মোমিন টাকার ব্যবস্থা না করায় ম্যানেজার সাইফুল হক ১ দিন সময় দেন। ওই দিন সন্ধ্যাকালীন ব্যাংকিংয়ের সময় অন্য এক গ্রাহকের জমা হওয়া ৮,৪০,০৬৭ টাকা ম্যানেজারের নির্দেশে মইদুর রহমান ঘাটতির ১০ লাখ টাকা বাবদ সমন্বয় করেন। গত বছর ২১ সেপ্টেম্বর ঘটনাটি ঘটলেও ২৯ সেপ্টেম্বর ম্যানেজার সাইফুল হক সহকারী কর্মকর্তা গ্রেড-১ মইদুর রহমানকে ২১ সেপ্টেম্বর এর তারিখ উল্লেখ করে কৈফিয়ত নোটিশ দেন এবং ওইদিন ব্যাংকে বসিয়েই মইদুর রহমানকে দিয়ে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তিমূলক জবাব লিখিয়ে নেন ম্যানেজার সাইফুলসহ তার সহযোগিরা। চাকরি বিধি অনুসারে কৈফিয়তের জবাব ৭ দিনে দেওয়ার বিধান থাকলেও মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে জোরপূর্বক তার জবাব লেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে ব্যাংক ম্যানেজার সাইফুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মইদুর রহমানের উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি মানিলন্ডারিংয়ের সাথে জড়িত থাকলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ তা তদন্ত করবে। অপরদিকে মইদুর রহমানের লিখিত কাগজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জোরপূর্বক নয়, মইদুর তার ভাই, ভাতিজা ও পিতার উপস্থিতিতে দায় স্বীকার করে লিখিত দিয়েছেন। এ সময় ওই ব্যাংকে ম্যাসেঞ্জার পদে কর্মরত মইদুর রহমানের ছোট ভাই সেলিম রেজা স্বাক্ষী রয়েছে বলেও জানান। তবে সেখানে উপস্থিত সেলিম রেজা এই প্রতিনিধির উপস্থিতিতে জানান, ওইদিন তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। পরে স্বাক্ষী হিসেবে ওই কাগজে তার স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। তিনি কাগজে কী লেখা হয়েছিল তা পড়ে দেখেননি বলে জানান। এসময় ব্যাংক ম্যানেজার সাইফুল হক ম্যাসেঞ্জার সেলিম রেজাকে মারার জন্য চড় ওঠান এবং তার চেম্বার থেকে তাকে বের হতে বলেন। এ নিয়ে ব্যাংকে মিটিং দেয়া হবে বলে ম্যানেজার জানান।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ