মেহেরপুর কারাগারে দুর্নীতি ও বন্দী নির্যাতন মামলায় জেলার আখতার হোসেন ও তিন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছনি আদালত। সোমবার দুপুরে মেহেরপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতের বিচারক মো. সানাউল্ল্যাহ এ আদেশ দেন।
গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন: মেহেরপুর জেলা কারাগারের প্রধান কারারক্ষী আল আমিন, কারারক্ষী সোলাইমান হোসেন ও মামুন হোসেন। এদের মধ্যে জেলার আখতার হোসেন বর্তমানে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে ওএসডি হিসেবে কর্মরত আছেন। বাকিরা মেহেরপুর জেলা কারাগারে কর্মরত রয়েছেন।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, জেলার আখতার হোসেন মামলার অন্য আসামিরা বেতনভুক্ত সরকারি কর্মচারি হওয়ার পরেও পরষ্পর যোগসাজশে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে বন্দিদের মাঝে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন, বন্দিরে ফাইল কাটা বাবদ ২৫০- ৫০০ টাকা নেয়া, কয়েদি বন্দিদের পাহারা ও ম্যাট বানানোর জন্য এক থেকে দুই হাজার টাকা নেয়া, বন্দি দেখা সাক্ষাতের জন্য অফিস কল বাবদ বন্দি প্রতি ২৫০ থেকে ৫০০টাকা করে নেয়া, বাহির কারা ক্যান্টিনে বন্দিরে জন্য মালামালের ব্যাগ প্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা নেয়া, বাহির ক্যান্টিনের মালামাল বিক্রি হোক বা না হোক ক্যান্টিন ম্যানেজারের কাছে থেকে মাসিক ২২ হাজার টাকা আদায়, দর্শনার্থীদের কাছে ১০ টাকা করে আদায়, উকালতনামা স্বাক্ষর করতে ৫০ টাকা নেয়া, কারাগারের ভিতরের ক্যান্টিন থেকে বন্দিদের মালামাল কিনতে বাধ্য করা হবে অতিক্তি মূল্যে বিক্রি করাসহ নানা অনিয়মের প্রতিবাদ করলে ২বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি শেখ শাহী প্রতিবাদ করলে তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে জেলার আখতার হোসেন। নির্যাতনে শাহী গুরুতর জখম হলেও তাকে কোনো চিকিৎসা না দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করেন জেলা শেখ আখতার হোসেন। বর্তমানে শেখ শাহী পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় বন্দি শেখ শাহীর ভাই শেখ মনি গত ১৩ অক্টোবর মেহেরপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে জেলার আখতার হোসেনসহ চারজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামি হলেন মেহেরপুর জেলা কারাগারের প্রধান কারারক্ষী আল আমিন, কারারক্ষী সোলাইমান হোসেন ও মামুন হোসেন।
মামলায় বাদি পক্ষের আইনজীবী এহান উদ্দিন মনা জানান, বিজ্ঞ বিচারক মামলার নথি পর্যালোচনা, সাক্ষিদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও আসামিদের জবানবন্দীর ভিত্তিতে সোমবার মামলার চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলার বাদি শেখ মনি জানান, বিজ্ঞ বিচারকের আদেশে আমরা সন্তুষ্ট। ভবিষ্যতে যে কোনো কারাগারে বন্দীদের তার ভাইয়ের নির্যাতিত হতে না হয় সে কারণে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৮ নভেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ