পিরোজপুরের আলোচিত স্কুলছাত্র সাদনাম সাকিব প্রিন্স হত্যা মামলায় দুই জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার দুপুরে পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ মো: গোলাম কিবরিয়া এ আদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো শহরের আদর্শপাড়া শফিকুল আলম হাওলাদারের দুই ছেলে নাজমুল হাসান নাঈম ও নাফিজ হাসান নাহিদ। মামলার অপর আসামি শফিকুল আলম হাওলাদারকে মামলা দিয়ে অব্যাহতি দিয়ে আদালত। নিহত সাদনাম সাবিক প্রিন্স (১৪) সদর উপজেলার আদর্শপাড়ার জাকির হোসেন সরদার লিটনের পুত্র। পিরোজপুর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের ১০ শ্রেণির ছাত্র ছিল প্রিন্স।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী খান মো: আলাউদ্দিন জানায়, ২০১৩ সালের ২৯ আগস্ট আসামি নাহিদ প্রিন্সের আদর্শপাড়া বাসা থেকে ডেকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নাহিদের সাথে ক্রিকেট খেলা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নাহিদ প্রিন্সের মুখমন্ডল ও চোখ বরাবরে ঘুষি মারলে প্রিন্স পাশে থাকা খাটের উপরে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে নাহিদ বিষয়টি ঘরে থাকা তার বড় ভাই নাঈম কে জানালে দুইজনে তাদের ব্যবহৃত লুঙ্গি, জামা ও গামছা দিয়ে প্রিন্সের মুখমন্ডল ও হাত-পা বেধে ঘরের ভিতরে খাটের নিচে ফেলে রাখে। পরে প্রিন্সের মৃত্যু নিশ্চিত বুজতে পেরে রাতে নাহিদ ও নাঈম দুজনে মৃতদেহ কাঠের সাথে বেধে ইট দিয়ে বাড়ির পাশে সিআইপাড়ার রায় পুকুরে ডুবিয়ে দেয়।
এদিকে প্রিন্সকে খুঁজে না পেয়ে তার বাবা জাকির হোসেন সরদার লিটন পিরোজপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করে। ঘটনার দুইদিন পরে ১ সেপ্টেম্বর পুকুরে প্রিন্সের লাশ ভেসে ওঠে। পরের দিন ২ সেপ্টেম্বর জাকির হোসেন সরদার লিটন বাদী হয়ে পিরোজপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২৪ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই মো: মনিরুজ্জামান মনির শহরের আদর্শপাড়া শফিকুল আলম হাওলাদার এবং তার ছোট ছেলে নাফিজ হাসান নাহিদ ও বড় ছেলে নাজমুল হাসান নাঈম তিনজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দাখিল করে। এ মামলায় বাদী সহ ১৪ জনের সাক্ষী শেষে বিচারক নাফিজ হাসান নাহিদ ও নাজমুল হাসান নাঈম কে ফাঁসির আদেশ এবং তাদের বাবা শফিকুল আলম হাওলাদার কে মামলা দিয়ে অব্যাহতি দেয়।