ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার চরযশোরদী ইউনিয়নের ধর্মদী গ্রামে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গ্রামের প্রভাবশালী একটি মহল অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পানিতে ডুবে মৃত শিশুকে নিয়ে চক্রন্ত করায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ধর্মদী গ্রামের মানিক চন্দ্র শীলের ৮ বছর বয়সী শিশু বাপ্পী তার বন্ধুদের সাথে গত ২৩ সেপ্টেম্বর স্থানীয় কুমার নদে গোসল করতে যায়। গোসলের এক পর্যায়ে সাতার না জানায় সে পানিতে তলিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় এলাকাবাসী নদের কিছুটা দুরে বাপ্পীর লাশটি খুঁজে পায়। পরবর্তীতে বাপ্পীর লাশটি তার পরিবারের সদস্যরা মাটি চাপা দিতে গেলে বাঁধা প্রদান করে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি পরিবার। তারা শিশুটির দরিদ্র পিতাকে জানান, বাপ্পীকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে। প্রভাবশালী মহলটির কথায় বাপ্পীর পিতা বিশ্বাস না করে মাটি চাপা দিতে গেলে তা করতে দেয়া হয়নি।
প্রভাবশালী মহলটি পরে স্থানীয় পুলিশকে খবর দিয়ে বাপ্পীর লাশটি পোষ্টমর্টেমের জন্য ফরিদপুরে পাঠায়। প্রভাবশালী ঐ চক্রটি শিশু মৃত্যুকে পুঁজি করে তাদের প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রভাবশালী মহলটির সাথে গ্রামের একটি পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। প্রতিপক্ষেকে জব্দ করতেই মৃত শিশুটিকে নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় অনেকেই। নিহত শিশুটির স্বজনেরা জানান, বাপ্পী তার বন্ধুদের সাথে নদে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যায়। এ নিয়ে পরিবারের স্বজনদের কোন অভিযোগ না থাকলেও লাশটি মাটি চাপা দিতে বাঁধা প্রদান করা হয়।
এ ব্যাপারে শিশুটির পিতা মানিক চন্দ্র শীল জানান, আমি বাজারের সেলুনে কাজ করার সময় শুনি বাপ্পী গোসল করতে গিয়ে কুমার নদে ডুবে গেছে। পরে বিকেলের দিকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। লাশটি বাড়ীতে এনে মাটি চাপা দিতে গেলে তাতে কয়েকজন বাঁধা সৃষ্টি করে। পোষ্টমর্টেমের জন্য বলা হলে আমি রাজী ছিলাম না। কিন্তু এলাকায় কয়েকজন পুলিশকে খবর দিয়ে লাশটি পোষ্টমর্টেমের জন্য ফরিদপুরে পাঠিয়ে দেয়। তিনি বলেন, আমার ছেলে পানিতে ডুবে মারা গেছে। এ নিয়ে আমি কাউকে সন্দেহ করিনা।
এদিকে চরযশোরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যার আরিফুজ্জামান পথিক বলেন, দুর্ঘটনার পর আমি কয়েকজনের সাথে কথা বলে জেনেছি, ছেলেটি পানিতে ডুবে মারা গেছে। পরে আমি লাশটি মাটি চাপা দিতে বলেছিলাম। কিন্তু এলাকার কারা যেন পুলিশকে খবর দিয়ে লাশটি নিয়ে যায়। এখন শুনছি, এলাকার একটি পক্ষ পানিতে ডুবে মৃত শিশুটিকে পূঁজি করে গ্রামের কয়েকজনকে ফাঁসাতে চেষ্টা করছে। এটা কোন মতেই মেনে নেয়া যায়না।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম নাসিম বলেন, শিশুটির মৃত্যু কিভাবে হয়েছে তা পোষ্টমর্টেমের রিপোর্ট পাবার পরই জানা যাবে। এ নিয়ে এলাকায় নানামুখী অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে শুনেছি।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৬ অক্টোবর, ২০১৭/ ওয়াসিফ