আগামী পূর্ণিমা তিথিতে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের বঙ্গোপসাগর উপকূলে দুবলার চরে শুরু হচ্ছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। তিথি অনুযায়ী আগামী ২ থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত দুবলার চরের আলোরকোল নামক স্থানে এ রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবছর দুবলার চরের এ মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীরা লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকায় করে এসে সমবেত হয়ে থাকেন। সেই সঙ্গে আসেন অসংখ্য বিদেশি পর্যটক। উৎসবের সময় কুটির শিল্পের মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। উৎসবে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। ৪ নভেম্বর সকালের জোয়ারে পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে এ উৎসব শেষ হবে। ঐতিহ্যবাহী এ উৎসব ঘিরে সুন্দরবন উপকূলজুড়ে নেওয়া হচ্ছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীর ছদ্মবেশে হরিণ শিকার বন্ধে বন বিভাগ এবারও বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে।
সুন্দরবন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাস পূর্ণিমায় তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের নিরাপদে যাতায়াতের জন্য সুন্দরবন বিভাগ আটটি নৌপথ নির্ধারণ করেছে। দর্শণার্থী ও তীর্থযাত্রীরা ২ থেকে ৪ নভেম্বর তিন দিনের জন্য অনুমতি পাবেন এবং সুন্দরবনে প্রবেশের সময় প্রবেশ পথে পূণ্যার্থীদের তিন দিনের জন্য জনপ্রতি ৫০ টাকা ও পর্যটকদের ৭০ টাকা এবং প্রতি ট্রলারের জন্য ১ হাজার ৫০০ টাকা সরকারি রাজস্ব দিতে হবে। মেলায় প্রবেশকারীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিয়ে সুন্দরবন বিভাগের কাছ থেকে অনুমতিপত্র নিতে হবে। যাত্রীরা নির্ধারিত একটিমাত্র পথ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন এবং দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবেন। তাঁরা সুন্দরবন বিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া অন্য কোথাও নৌকা, লঞ্চ বা ট্রলার থামানোর সুযোগ পাবেন না। পরিবেশ দূষণ করে এমন বস্তু, মাইক বাজানো, পটকা ফাটানো, বিস্ফোরকদ্রব্য ও আগ্নেয়াস্ত্র বহন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহমুদুল হাসান বলেন, গত বছরের মতো এ বছরও দর্শণার্থীদের সুন্দরবন থেকে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হবে না। তাঁদের নিজেদের জ্বালানি সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে হবে। কোনো রকম মাংস বহনও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া তীর্থযাত্রীরা কোনো রকম বনজ সম্পদ যাতে বিনষ্ট না করেন, সে জন্যও নেওয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। সুন্দরবন বিভাগ ও পুলিশের সমন্বয়ে চারটি টহল দল ১ নভেম্বর থেকে পশুর, শ্যালা, ভোলা ও শিবসা নদীতে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার