সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় কপোতাক্ষ নদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশ থেকে অবাধে মাটি কেটে ইট ভাটায় নেওয়া হচ্ছে। এজন্য বাঁধের পাশেই পুকুর কাটছে ভাটা মালিকরা। ফলে বর্ষা মৌসুমে ভেড়ি বাঁধ ধসে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করছে এলাকাবাসী। অথচও ওই বাঁধের ওপর কোনো ধরনের কার্যক্রম করা যাবে না মর্মে হাইকোটের আদেশ থাকলেও ভেড়ি বাঁধের পাশে থেকে মাটি কাটা অব্যাহত রেখেছে আরবিএস ইট ভাটা মালিক।
তালা উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার পূর্ব দিকে গোনালী আরবিএস ইট ভাটা। ভাটার সীমানা গোনালী খেয়াঘাট সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে থেকে এ মাটি কাটা হচ্ছে ।
কপোতাক্ষ নদের সীমানার মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। নদ ভরাট হয়ে জেগে ওঠা চরের জমি ভাটার লোকজন দখল করে রেখেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে পুকুর খনন করে ভাটার ইট নির্মাণের জন্য মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে।
গানালী গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ২০১১ সালে এলাকায় বন্যা দেখা দেয়। ফলে কয়েক হাজার মানুষ ছয়-সাত মাস কপোতাক্ষ নদের উপচে পড়া পানতে প্লাবিত হয়ে গৃহহীন হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে কপোতাক্ষ নদ খনন করে কয়েক ফুট উচু করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করে শেখ হাসিনা সরকার। কিন্তু চলতি বছর ওই এলাকার আরবিএস ইট ভাটার জন্য ভেড়িবাঁধের পাশ থেকে আবাদে মাটি কাটা হচ্ছে। এজন্য বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পড়েছে হুমকির মূখে। বর্ষা মৌসুম আসলেই বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্থ্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাটিকাটার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, আরবিএস ইট ভাটার ম্যানেজার সুদেল ইকবালের নেতৃত্বে শ্রমিক হিসেবে তারা মাটি কাটছেন। গত পাঁচদিন যাবত তাদের এ মাটি কাটা চলছে।
দক্ষিণ নলতা গ্রামের ময়েজ উদ্দীন ও তফেলউদ্দিন জানান, গোনালী এলাকায় কপোতাক্ষ নদের তীরের উত্তর পাশে সাতক্ষীরা শহরের চালতেতলা এলাকার আতিয়ার রহমান কয়েক বছর আগে ২৫ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে আরবিএস ইটের ভাটা প্রতিষ্ঠা করেন। পরে কপোতাক্ষ নদের ভরাট হওয়া প্রায় ১০-১৫ বিঘা জমি দখল করে চালাচ্ছেন ভাটার কার্যক্রম।
আরবিএস ভাটার ম্যানেজার সুদেল ইকবাল হোসেন জানান, প্রতিবছর মাটি নেওয়া হয় তাই এ বছরও কাটছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড বা এসিল্যান্ড অফিস থেকে কোনো অনুমোদন নেওয়া নেই।
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাসান হাফিজুর রহমান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই । তবে কেউ বাঁধের থেকে মাটি কাঁটলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফরিদ হোসেন বলেন, কপোতাক্ষ নদের বাঁধ থেকে মাটি কাটা অন্যায়। কেউ মাটি কাটলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহ প্রকৌশলী প্রবীর গোস্বামী জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের থেকে মাটি কাটলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার