সাম্প্রতিক সময়ে জেলার কয়েকটি স্থানে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজনের হতাহতের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে পঞ্চগড়। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ এবং বাইপাস সড়কের দাবিতে আজ সোমবার দুপুরে জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। বাঁচাও পঞ্চগড় নামের একটি দলমত নিরপেক্ষ সংগঠনের আয়োজনে সামাজিক সাংস্কৃতিক, পেশাজিবী ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মী, স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং মসজিদের ইমামসহ কয়েক হাজার মানুষ এই গণজমায়েতে অংশ নেন। এসময় প্রতিবাদী মিছিল ও বক্তব্যের সাথে সংগঠনের নেতারা এই গণজমায়েতের দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। এসময় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
বাঁচাও পঞ্চগড়ের আহ্বায়ক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাটের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণজমায়েতে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমানুল্লাহ বাচ্চু, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু সালেক, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজল, মকবুলার রহমান সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এম দেলোয়ার হোসেন, সরকারি মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান হাসনুর রশিদ বাবু, নাগরিক কমিটির সভাপতি এরশাদ হোসেন সরকার, জতীয় মহিলা সংস্থা পঞ্চগড় শাখার সভাপতি রেজিয়া ইসলাম, সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক আবু বকর ছিদ্দিক, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আবু তোয়াবুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা অবিলম্বে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য বাইপাস সড়ক নির্মাণের দাবী জানান। এ সময় পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত বাইপাস সড়ক নির্মাণ ছাড়াও রোড ডিভাইডার নির্মাণ, আধুনিক স্পিড ব্রেকার নির্মাণ, যত্রতত্র গাড়ির পার্কিং বন্ধ করে ফুটপাত দখল মুক্ত করা, শহর এলাকায় গাড়ির গতিসীমা ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা, লাইসেন্সবিহীন বদলী ড্রাইভার দ্বারা বাস-ট্রাক চালানো বন্ধ, পৌরসভার বিভিন্ন স্কুল কলেজের সামনে জেব্রা ক্রসিং স্থাপন, ব্যাটারিচালিত অটোবাইক, ইজিবাইক, নসিমন-করিমন, ভটভটি, ট্রাক্টর ট্রলির চলাচল বন্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করার সাত দফা দাবি তুলে ধরেন আয়োজক সংগঠনটির আহ্বায়ক। আগামী ৭ দিনের মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান তিনি। এ সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে গণস্বাক্ষরসহ বৃহত্তর আন্দোলনের যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় গণজমায়েতে।
উল্লেখ্য, গত এক মাসে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ প্রায় দশজন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর ফুঁসে উঠেছে পঞ্চগড়ের সাধারণ মানুষ। এরই প্রেক্ষিতে দলমত নির্বিশেষে বাঁচাও পঞ্চগড় নামে সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করার পাশাপাশি এই গণজমায়েতের ডাক দেয়। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়ার মাধ্যমে গণজমায়েতের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮/মাহবুব