ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে সোমবার দিনভর হোয়াইট হাউসে ইউক্রেন ও ইউরোপের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টানা কয়েক ঘণ্টা দফায় দফায় বৈঠকের পর সন্ধ্যায় তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে সরাসরি বৈঠক আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্প তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, তিনি ফোনে পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। সেই ফোনালাপটি হয় হোয়াইট হাউসে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক চলাকালেই।
তবে পুতিন–জেলেনস্কির বৈঠকটি কবে এবং কোথায় হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানাননি ট্রাম্প। তিনি লিখেছেন, ওই বৈঠকের পর আমাদের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে। সেখানে দুই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমি থাকব। প্রায় চার বছর ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাথমিক পদক্ষেপ।
তিনি আরও জানান, আজকের বৈঠকে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার বিষয়টি ছিল প্রধান আলোচ্য। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এই নিশ্চয়তা দেবে, যার সমন্বয় করবে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনায় সবাই খুবই আশাবাদী বলেও জানান ট্রাম্প।
এর আগে, গত শুক্রবার আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে এক বৈঠকে অংশ নেন ট্রাম্প। সেই ধারাবাহিকতায় সোমবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিসহ ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে দিনব্যাপী আলোচনা করেন তিনি।
বৈঠকে অংশ নেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেরৎস, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব এবং ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটে।
বৈঠকের মাঝপথেই ট্রাম্প ফোন করেন পুতিনকে। ক্রেমলিন সূত্রে জানা গেছে, দুই নেতার মধ্যে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে ফোনালাপ হয়। বৈঠক শেষে হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আজকের বৈঠকটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো বৈঠক ছিল।
জেলেনস্কি আরও জানান, তিনি ট্রাম্পকে যুদ্ধক্ষেত্রের মানচিত্র দেখিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন, কোন কোন এলাকা কার দখলে রয়েছে। একইসঙ্গে তিনি জানান, পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসার জন্য ইউক্রেন প্রস্তুত।
অন্যদিকে, বৈঠক শেষে জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেরৎস সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন—পুতিন দুই সপ্তাহের মধ্যে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছেন। যদিও এখনো স্থান চূড়ান্ত হয়নি। তথ্যসূত্র : রয়টার্স।
বিডি-প্রতিদিন/শআ