নির্মিত হওয়ার ১৫ বছরেও ব্যবহার করা হয়নি ঠাকুরগাঁও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি। টার্মিনালটিতে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকলেও রোদ-বৃষ্টিতে কষ্ট করে যাত্রীদের রাস্তা থেকেই উঠতে হচ্ছে বাসে। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় সেখানে এখন মাদকসেবীসহ নানা অপকর্মের আস্তানায় পরিণত হয়েছে টার্মিনালটি।
ঠাকুরগাঁও জেলার একমাত্র কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটিতে বসার ব্যবস্থা, ক্যান্টিন, প্রতিষ্ঠান, টয়লেট ও নামাজের ব্যবস্থাসহ রয়েছে সবধরনের সুবিধা। তারপরও কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে দীর্ঘ ১৫ বছরেও টার্মিনালটি চালু হয়নি। দু’একটি নষ্ট যানবাহন টার্মিনালের ভেতরে ফেলে রাখা হয়েছে। এছাড়া আর কোন কাজেই আসছে না এটি। বহিরাগতদের প্রবেশে মাদকসেবী ও অসামাজিক কার্যকলাপের আস্তানায় পরিণত হয়েছে টার্মিনালটি। আর যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ে রাস্তা থেকেই বাসে উঠে যাচ্ছেন গন্তব্যস্থলে। অপরদিকে জেলায় ট্রাক টার্মিনাল না থাকায় যত্রতত্র সড়কে রাখছে ট্রাক। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।
টার্মিনালটি ব্যবহার না করায় ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। আর মালিক সমিতি'র নির্দেশেই রাস্তার উপর কাউন্টার ব্যবহার করে বিক্রি করছে টিকিট। এতে যাত্রীরা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জেলার নিয়মিত যাত্রী সোহেল, রতন, পারভেজসহ কয়েকজন জানান, আমরা প্রতিদিন নিয়মিত কাজে ঠাকুরগাঁও থেকে রংপুর, দিনাজপুর, সৈয়দপুরসহ বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করি। টিকিট কেটে বাসের জন্য জন্য দীর্ঘ সময় পার করতে হলেও প্রস্রাব-পায়খানার চাপ দিলে করার কিছুই থাকে না। কারণ গাড়ি ছাড়ে রাস্তা থেকে। যদি টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়তো তাহলে বিশেষ করে যাত্রীদের অনেক সুবিধা হতো। সরকার এতো টাকা দিয়ে টার্মিনাল তৈরি করে দিয়েছেন তা এখন মাদকসেবীদের আড্ডায় ঘর হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। আমরা আশা করছি কর্তৃপক্ষ দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। তা না হলে টার্মিনালটি ভেঙ্গে সরকারের বিকল্প কাজে ব্যবহার করবেন।
জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জব্বার জানান, জেলার ৪ উপজেলায় উল্টো পার্শ্বে অবস্থান করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চেষ্টা করেও তা কাজে লাগাতে পারছি না।
জেলা বাস-মিনিবাস ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সভাপতি বেলাল হোসেন জানান, ইতোমধ্যে টার্মিনালটি ব্যবহারের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কিছু বাস কাউন্টারের সামনে থেকে ছাড়ছে। আমরা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছি ঢাকাগামী বাসগুলো নিয়ে। ঢাকাগামী বাস কর্তৃপক্ষের সাথে কয়েক দফা বৈঠক করে আশস্ত করলেও তারা শহরের বিভিন্নস্থান থেকে বাস ছাড়ার কারণে টার্নিমালটি পূর্ণাঙ্গভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। আমরা এ বিষয়ে আবারও আলোচনায় বসবো।
পৌর মেয়র মির্জা ফয়সাল আমিন জানান, কয়েক দফা শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিক সমিতি নেতাদের সাথে এ বিষয়ে বৈঠক হয়েছে অতি সত্তর তা কার্যকর করা হবে বলে আশা করছি।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার অধীনে ২০০৩ সালে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে ঠাকুরগাঁও-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে প্রায় ৫ বিঘা জমির উপর এলজিইডি’র তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয় ঠাকুরগাঁও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল।
বিডি প্রতিদিন/১৪ মার্চ, ২০১৮/ফারজানা