বরিশাল আধুনিক জেনারেল হাসপাতালে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে দায়িত্বরত দুই চিকিৎসককে কর্মস্থলে অনুপস্থিতসহ নানা অনিয়ম পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে আজ আকস্মিক এই অভিযান পরিচালিত হয়।
এ সময় সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত কলেরার স্যালাইন রোগীদের না দিয়ে স্টোরে মজুদ রাখার দায়ে দায়িত্বরত স্টোর ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স মুনিরা ইয়াসমিনকে ভৎর্সনা করাসহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন দুদক কমিশনার। এছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
দুই দিনের সরকারি সফরের শেষ দিন আজ সকাল ১১টার দিকে আকস্মিক জেনারেল হাসপাতালে অভিযান চালায় দুদক। এ সময় ডেন্টাল সার্জন ডা. মাকসুদুর রহমান এবং মেডিকেল অফিসার ডা. সুপ্লব চন্দ্র ধরকে নিজ নিজ দপ্তরে অনুপস্থিত পান দুদক কমিশনার।
পরে তিনি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন। কলেরা ওয়ার্ডের রোগীরা সরকারি কোন ওষুধ তাদের না দেওয়ার অভিযোগ করেন।
রোগীদের অভিযোগ পেয়ে হাসপাতালের কলেরা ওয়ার্ডের স্টোরে হানা দিয়ে বিস্মিত হন দুদক কমিশনার। সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত স্যালাইন রোগীদের না দিয়ে স্টোরে মজুদ করে রাখার বিষয়টি হাতেনাতে ধরে ফেলেন তিনি। ওই কক্ষের বিভিন্ন স্থান থেকে ১ হাজারেরও বেশি অব্যবহৃত স্যালাইন উদ্ধার করে দুদক কমিশনার। এ সময় স্টোর ইনচার্জকে ভৎর্সনা করা হয়।
স্টোর ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স মুনিরা ইয়াসমিন এবং অনুপস্থিত চিকিৎসকদের একজন ডা. সুপ্লব চন্দ্র ধর অভিযোগের বিষয়ে সন্তোষজনক কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। এমনকি জেনালের হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. দেলোয়ার হোসেনও রোগীদের সরকারি স্যালাইন না দেওয়াসহ চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির বিষয়ে কোন সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
পরিদর্শন শেষে দুদক কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম বলেন, সারা দেশে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর এবং বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালে অভিযান চালাচ্ছে দুদক। সারা দেশের যে চিত্র তিনি দেখেছেন, সেই তুলনায় বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা জঘন্য। দুইজন চিকিৎসককে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত পেয়েছেন। রোগীদের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত কলেরার স্যালাইন রোগীদের মাঝে বিতরণ না করে তারা ১ হাজারেরও বেশি স্যালাইন অবৈধভাবে স্টোরে জমা রেখেছে।
এ ঘটনায় তিনি সংশ্লিস্টদের দায়িত্বে অবহেলাসহ নানা অনিয়মের বিষয়ে জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া এ ঘটনায় দুদকও আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন দুদক কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার