শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী থাকলেও তাদের ক্লাস হয় না। একজন অফিস সহকারী ও একজন মেকানিক্স চালাচ্ছেন নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর পৌর এলাকায় অবস্থিত সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট। আজ স্কুলটি পরিদর্শনে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখলেন নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য।
মোট ১৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী ৮ জন প্রেষণে অন্য প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করছেন। বাকি ৬ জনের একজন অসুস্থ, ৩ জন অনুপস্থিত রয়েছেন। শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী থাকলেও তাদের ক্লাস হয় না।
জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির মোট ১৬টি পদের সুপারিনটেনডেন্ট ও একজন জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর'র পদ শুন্য রয়েছে বাকি ১৪ টি পদের ৫ জন শিক্ষকসহ ৮ জন অন্যত্রে প্রেষনে দায়িত্ব পালন করছেন। একজন ইনস্ট্রাক্টর সুপারিনটেনডেন্ট'র দায়িত্বে থাকলেও তিনি অসুস্থ থাকায় প্রায় একমাস ধরে স্কুলে (টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট) আসেন না। দু'জন হেলপার, একজন হিসাব সহকারি, একজন মেকানিক্স ও একজন নৈশ প্রহরী কর্মরত থাকলেও তারা সকালে এসে ২-১ ঘন্টা স্কুলে থেকে বাড়ি চলে যান। শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি থাকলেও তাদের ক্লাস হয় না। আর ক্লাস হয় না বলেই ছেলে মেয়েরাও স্কুলে এসে ফিরে যায়। যারা ভর্তি হতে আসে তাদেরকে ভর্তি হতে নানা ভাবে নিরুৎসাহিত করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট ভবনে কোন সাইনবোর্ড চোখে পড়ে না।
২০১৮-১৯ শিক্ষা বর্ষে ৯ম শ্রেণিতে ২৪ জন শিক্ষার্থীর নিবন্ধন যথা সময়ে করা হয়নি। পরে বর্ধিত সময়ে গত ১০ এপ্রিল তাদের নিবন্ধন করা হয় বলে অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৩০ আগষ্ট বস্ত্র পরিদপ্তরের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ ইসমাইল স্বাক্ষরিত এক পত্রে গোপালপুরে অবস্থিত টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট নাটোর জেলা সদরে স্থানান্তরের পূর্ব প্রস্তুতিমূলক সকল কার্যাদি সম্পাদনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া কয়েকজন শিক্ষককে অন্যত্র বদলি করা হয়। এলাকাবাসির দাবীর মুখে সংসদ সদস্য এ্যাড. আবুল কালাম আজাদের হস্তক্ষেপে এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মির্জা আজমের নির্দেশে সেই বছরই টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউটটি লালপুর থেকে নাটোর জেলা সদরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়।
টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট পরিদর্শনকালে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের জানান, প্রায় ৩২ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নাটোর জেলা সদরে স্থানান্তরের অপতৎপরতা চলছিল। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মির্জা আজমের নির্দেশে তা ধুলিস্যাৎ হলেও বস্ত্রপরিদপ্তরের পরিচালক তা মেনে নিতে পারেননি। তাই তিনি শিক্ষকদের অন্যত্র প্রেষণে বদলী করে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস করতে চাচ্ছেন। এতে শতাধিক শিক্ষার্থীর জীবন নষ্ট হতে চলেছে।
সংসদ সদস্যের টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট পরিদর্শনকালে লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নজরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফু, সাধারণ সম্পাদক ইসাহাক আলী, জেলা পরিষদের সদস্য বদিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার