শ্রমিক দিবস আসে আবার যায়। কিন্তু দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় পুরুষের পাশাপাশি নারীরা কাজ করলেও আজও মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা। শুধু কৃষি কাজই নয়- দিনের পর দিন বেড়েছে নারী শ্রমিকদের কর্মপরিধি কিন্তু বাড়েনি তাদের পারিশ্রমিক। অবহেলায় আর পরনির্ভরশীল হয়ে বেঁচে না থেকে স্বাবলম্বী হয়ে বেঁচে থাকার তাগিদেই নারীরা বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত হচ্ছেন।
দিনাজপুর সদর, চিরিরবন্দর, বীরগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার নারীরা নির্মানধীন ভবনের কাজসহ ইটভাটা, চারা রোপণ, আগাছা নিড়ানি, ধানকাটা, মাড়াই, গমকাটাসহ প্রভৃতি কাজও করছেন। তবে শ্রম দিলেও শ্রমের নায্য মজুরি না পাওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে তাদের।
চিরিরবন্দরের উপজেলার নশরতপুর ইউপি’র মুন্সিপাড়ার নারী শ্রমিক মালেকা বানু জানায়, সারাদিন ইট ভেঙে ১৫০ টাকা পাই। স্বামীর রোজগার দিয়ে সংসার চলা খুব কষ্ট হয়। তাই অভাবের সংসারে একটু সহযোগিতার জন্যই কাজ করি। তার স্বামীও ইটভাটার একজন শ্রমিক। তাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫ জন। স্বামীর উপার্জনে নির্ভর হলেও বিভিন্ন সময় নিজেও উপার্জনে কাজ করে মালেকা বানু। তিনি ইটভাঙাসহ চারারোপণ, আগাছা নিড়ানি, পাটের বীজ ছিটানো, ধানকাটা, মাড়াই, গমকাটাসহ প্রভৃতি কাজও করেন। তবে শ্রম দিলেও শ্রমের নায্য মজুরি না পাওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে তার।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, একজন পুরুষ যতটুকু সময় দেয়, নারীরাও ততটুকু সময় দিই। পুরুষ ২৫০ টাকা পেলেও নারীরা পাই ১২০-১৫০ টাকা পর্যন্ত। পুরুষের চেয়ে কোনো অংশে কাজ কম করি না বলে মন্তব্য করেন মালেকা বানু।
আরও জোসনা আক্তার, বড়দা, সুসমা রানীর মতো শত শত নারীর কর্মব্যস্ততা চোখে পড়বে চিরিরবন্দরের নশরতপুর, সাইতাড়া, ভিয়েইল, পুনট্রি, আব্দুলপুর, আউলিয়া পুকুরসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়। দল বেঁধে ১০-১২ জনের গ্রুপ হয়ে বিভিন্ন ইট ভাটায় কাজ করছেন তারা।
ইটভাটা মালিক মকবুল জানান, পুরুষ শ্রমিকরা বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতে যায়। পুরুষ শ্রমিক না পাওয়ায় নারী শ্রমিকদের যেকোন সময় কাজে পাওয়া যায়। তাদের ১২০-২০০ টাকা করে হাজিরা দেই। তবে নারী শ্রমিকদের মজুরি তুলনামূলক কম দেওয়া হয় বলেও স্বীকার করেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার