শালবনের শুকনো পাতা কুড়িয়েও জীবিকা নির্বাহ করছে অনেকে। প্রতিবছর ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে দিনাজপুরের কয়েকটি শালবনের গাছগুলোর ঝড়া পাতা কুড়িয়ে তা বাজারজাত করে শত শত মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। এই শালপাতা কুড়িয়েই অনেকেই তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন। যে যত বেশি সংগ্রহ করতে পারে তার আয় তত বেশি হয়। আবার অনেকে এই পাতা সংগ্রহ করে তা বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসের দিকে দ্বিগুণ মূল্যে বাজারজাত করে।
দিনাজপুরের বিরলের ধর্মপুর, নবাবগঞ্জ, বীরগঞ্জ, বিরামপুরসহ বিভিন্ন স্থানে রয়েছে শালবাগান। যেখানে বনের আশেপাশের অনেক মানুষের এই শালবাগানের কুড়ানো শালপাতাই জীবিকার মাধ্যম। বিভিন্ন শালবনে শুকনো পাতা কুড়িয়ে শত শত মানুষ ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছে এই শালপাতায়।
জানা যায়, বিরলে কালিয়াগঞ্জের ধর্মপুর ও রাণীপুকুর ইউপি’র ধর্মপুর, নলপুর, এনায়েতপুর, মহেশ শীবপুর, ছোট চৌপুকুরিয়া, বাঁমনগাঁও, বিশ্বনাথপুর, রাণীপুর, কামদেবপুর, ধর্মজইনসহ আশপাশের গ্রামগুলোয় বিশাল এই শালবনের বিস্তৃতি। বীরগঞ্জের ভোগনগর ইউপির ৮৫৫.৫০ একর ভূমির উপর অবস্থিত বনে চোখে পড়বে প্রাচীন পত্রঝরা সিংড়ার বনাঞ্চল শালবন।
বসন্তের আগমনের শুরু থেকে ধর্মপুর, সিংড়াসহ বিভিন্ন শালবনের শাল, সেগুন, আকাশমনি গাছসহ অন্যান্য গাছের শুকনো পাতা ব্যাপক ঝড়ে পড়তে শুরু করে। আর এই শুকনো পাতা সংগ্রহ করে নিজেদের দৈনন্দিন রান্নার কাজসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বাজারজাত করে জীবিকা নির্বাহ করে ওই এলাকার হৈমন্তি, জীবীত, অরুন, রাজেন, জাকারিয়া, এনামুল, মজেন, শান্তিবালা, রূপবানীসহ নাম না জানা অনেকে।
শালপাতা সংগ্রহকারীরা জানায়, প্রতিদিন একজন ১৫ থেকে ২০ বস্তা পাতা সংগ্রহ করতে পারেন। প্রতি বস্তা পাতা এলাকায় ২০ টাকা হারে বিক্রি হয়। এতে প্রতিদিন ৩০০ থেকে প্রায় ৪০০ টাকা আয় করা সম্ভব হয়। আর যাদের ভ্যানগাড়ী কিংবা অন্য কোন বাহন আছে তারা এই পাতার বস্তাগুলো নিয়ে শহরে গিয়ে প্রতি বস্তা ৫০ টাকা দরে বিক্রি করেন। তাদের ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি আয় হয়। তবে বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে বৃষ্টি’র পর বিক্রি করলে দাম আরো বেশি পাওয়া যায় এবং তখন শুকনো পাতার চাহিদাও বেশী থাকে। এসব শুকনো পাতার কোন হাট-বাজার গড়ে উঠেনি। পরিচিতদের মাধ্যমে এই পাতা সংগ্রহ ও বাজারজাত করে আসছেন তারা।
বিডি প্রতিদিন/১লা মে ২০১৮/হিমেল