সরকারের কঠোর নিষেধজ্ঞার মধ্যেও মাদারীপুরে চলছে কোচিং বাণিজ্য। কিছুতেই থামছে না এই বাণিজ্য। নীতিমালা তোয়াক্কা না করে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘরভাড়া করে চলছে তাদের এই কর্মকাণ্ড।
এর ফলে ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখার খরচ চালাতে গিয়ে অভিভাবকরা হিমশিম খাচ্ছেন। সেই সঙ্গে উপেক্ষিত হচ্ছে সরকারের নীতিমালা।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শ্রেণি কক্ষে শিক্ষকরা ঠিকমত পড়ান না। একাধিক অভিভাবক বলেন, শ্রেণি কক্ষে ঠিকমত পড়ালে বাইরে কোচিং করার প্রয়োজন হয় না।
তারা জানান, ভাল-মন্দের বাছ-বিচার না করে ঢালাওভাবে শ্রেণির সব শিক্ষার্থীকে কোচিং করতে বাধ্য করা হয়েছে। কোচিং না করলে পরীক্ষায় শিক্ষকরা নম্বর কম দেন। শহরের দুটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই কোচিং প্রবণতা বেশি।
সরেজমিন দেখা গেছে, ইউ আই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের আশপাশের ৮-১০ টি বাসা ভাড়া নিয়ে কোচিং বাণিজ্য চালানো হচ্ছে।
এই স্কুলের শিক্ষক সাইফুল ইসলাম, পারভীন আক্তারের কোচিং চলে মাস্টার কলোনি রোডে, মোহাম্মদ আলি ও সঞ্জয়ের কোচিং কালিবাড়ী মোড়ে, ফয়জুর রহমান এবং ফিরোজ আহম্মেদ পড়ান আমিরাবাদ এলাকায়, সৌমিত্র দাস ও ফারুক হোসেনও এই অনৈতিক কাজে লিপ্ত।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শ্রেণি ভেদে কমপক্ষে এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকাও আদায় করা হয় কোচিংয়ের জন্য। এতে একজন শিক্ষক প্রতিদিন একাধিক ব্যাচ পড়িয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করেন।
আগে এই কোচিং বাণিজ্য শহরের নামি দামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রচলিত থাকলেও এখন তা সংক্রমিত রোগের মত ছড়িয়ে পড়েছে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের স্কুলগুলোতেও। শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতিটা বিষয়ের কোচিং চালু হওয়ায় নিয়মিত ক্লাসের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে শিক্ষার্থীরা। এতে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে।
তবে এ বিষয়ে শিক্ষক ফয়জুর রহমান দাবি করেছেন, তারা আগে প্রাইভেট ও কোচিং করাতেন, এখন আর করান না।
তবে সরেজমিনে প্রত্যেক শিক্ষকের কোচিংয়ে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী দেখা গেছে। এই সব শিক্ষার্থীরা না জেনে পড়তে এসেছে বলেও দাবি করেন অভিযুক্ত শিক্ষকরা।
তবে এই কাজে জড়িতদের প্রমাণ সাপেক্ষে শাস্তির কথা জানিয়েছেন মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. ওহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। প্রমাণ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/কালাম