সাভারের সবজি বিক্রেতা মহসিন। প্রকাশ্যেই তাকে কুপিয়ে হত্যা করে রাস্তায় ফেলে রেখে যায় সন্ত্রাসীরা। স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করে ফেলে দেয়া হয় নদীতে। পরপর এমনি কয়েকটি খুনের ঘটনায় সাধারণ জনগণ ও পুলিশের উদ্বেগ বেড়ে যায়।
ঠিক এমনি সময় খুনিদের একটি সেন্ডেলের সূত্র ধরে গ্রেফতার হয় ভয়ংকর অপরাধী চক্রের দশ সদস্য। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
রাজধানী থেকে শুরু করে সারা দেশে রয়েছে পেশাদার খুনী ও ছিনতাইকারী দলের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এরা কৌশলে সিএনজি, অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন যানবাহন ভাড়ায় নিয়ে নির্জনস্থানে নিয়ে যায়। এরপর চালককে খুন করে ছিনতাই করে যানবাহন। ২ মার্চ সাভারের ভাকুর্তায় আ: মজিদের ছেলে মতিউর রহমানকে (৪০) খুন করে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা।
এ সময় ঘটনাস্থলে পাওয়া যায় একটি সেন্ডেল। সেন্ডেলেল মালিককে খুঁজতে গিয়ে হত্যার আসামীদের গ্রেফতার করে পুলিশ। এরা হচ্ছে, বগুড়ার ধুনট থানার সাতটিকড়ি গ্রামের বিল্লাল মিয়ার ছেলে বকুল ভুলু (১৮) ও রাজশাহীর পবি থানার দাদপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে আবদুল্লাহ তুষার (১৮)।
এঘটনায় জড়িত আরেক আসামী রাসেল বাবু পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ১১ মার্চ সাভারের ঝাউচর এলাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে অটো রিক্সা ছিনতাই করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত রাজশাহীর আবদুল্লাহ তুষারসহ রংপুরের গঙ্গাচরা থানার বড়মধর গ্রামের জসিমের ছেলে মিলন (৩৫)। মিলনকে গ্রেফতারের পর লুণ্ঠিত অটোরিক্সা ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। একই অভিযুক্তরা ২৭ মার্চ কেরানীগঞ্জ থেকে জাকিরের রিক্সা ভাড়া করে তাকে চাকু দিয়ে খুন করে ছিনতাই করে অটো রিক্সা।
গত ১৪ এপ্রিল সাভার চৌরঙ্গী মার্কেটের সামনে সবজি বিত্রেতা সিরাজুল ইসলামের ছেলে মহসিন (২১) কে কুপিয়ে হত্যা করে ফেলে রেখে যায় ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা। এ অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় মানিকগঞ্জের কানারচর গ্রামের ইয়ূসুফের ছেলে রতন (৩৫), ঢাকার সেনাইল গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে হারুন অর রশীদ (৪০), সিরাজগঞ্জের জামতলা গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে শান্ত (৩৫), সিরাজগঞ্জের জামসিং এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে শাওন (২৭) কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা সাভার ও আশে-পাশের এলাকায় বাসা ভাড়া করে সারাদেশে পেশাদার খুনী ও ছিনতাইকারী দল পরিচালনা করে আসছিল।
আজ সাভার মডেল থানায় প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ মিজান সাফিউর রহমান জানান, বিগত কয়েক মাস যাবত ঢাকা জেলার সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি খুন ও ছিনতাই সংগঠিত হয়। এতে করে পুলিশের উদ্বেগ বেড়ে যায়। মার্চের দুই তারিখে চালককে হত্যা করে একটি অটো রিক্সা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় একটি সেন্ডেল। এই সেন্ডেলের মালিককে মালিককে খুঁজতে গিয়ে জানা যায় অপরাধী চক্রের অনেক তথ্য। এভাবেই অভিযান পরিচালনা করে ভয়ংকর অপরাধী চক্রের দশ সদসকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার