মাল্টা ভাল লাগে না এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। সেই মাল্টা এখন উত্তরের জনপদ দিনাজপুরের গাছে গাছে ঝুলছে। মাল্টা পাহাড়ি ফল হিসেবে পরিচিত হলেও দিনাজপুরের সমতল ভূমিতে দেখা দিয়েছে এ ফলের উজ্জল সম্ভাবনা।
এবার দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় পরিত্যক্ত পুকুর পাড়েই বানিজ্যিকভাবে বারি-১ জাতের মাল্টা চাষ করে বাজিমাত করেছেন কাজী আবু সায়াদ চৌধুরী। শতাধিক মাল্টার বাগানে সাথী ফসল হিসেবে লেবু গাছ, পেঁপে গাছ ও লিচু চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন তিনি।
পরিত্যক্ত জমিসহ এ অঞ্চলে আবাদের প্রসার বাড়লে এ ফল আর আমদানী করতে হবে না। এ অঞ্চলে অর্থনৈতিকভাবে বিপ্লব সাধিত হবে বলে চাষী কাজী আবু সায়াদ চৌধুরী আশা প্রকাশ করেছেন। মাল্টায় নেই কোন ফরমালিন, নেই কোন ঝুঁকি, তাই এই অঞ্চলের মাল্টাও হতে পারে সর্বাধিক জনপ্রিয় ও লাভজনক চাষের ফল। মাল্টাতে বিভিন্ন ভিটামিনসহ অনেক পুষ্টিগুন রয়েছে। তাই এর চাহিদাও রয়েছে প্রচুর।
পরিত্যক্ত পুকুর পাড়ের জমিতে মাল্টা চাষ করে সফল হয়ে এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ঘোড়াঘাট উপজেলার গোপালপুর গ্রামের কাজী আবু সায়াদ চৌধুরী। মাল্টা চাষি কাজী আবু সায়াদ চৌধুরী জানান, পরিত্যক্ত পুকুর পাড়ের তার বাগানে গাছে গাছে ঝুলছে থোকা থোকা মাল্টা। রয়েছে শতাধিক মাল্টা গাছ। ব্যক্তিগত ভাবে ২০১৭ সালে আগষ্ট মাসে ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় পালশা ইউপি’র বিলপাড়া গ্রামের পৈত্রিক দেড় একর পরিমান পরিত্যক্ত পুকুর পাড়ের পশ্চিম পার্শ্বে ২ বিঘা জমিতে মাল্টা (বারি-১) জাতের চারা রোপন করেন। প্রায় ২ বছরেই মাল্টা গাছে ফল ধরে। গাছে গাছে এখন বিভিন্ন সাইজের মাল্টা। বাতাসে মাল্টার মিষ্টির গন্ধ। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে ফিকে সবুজ বর্নের লোভনীয় মাল্টা। জুন মাসে এর ফল আসে এবং অক্টোবর মাসের দিকে মাল্টা পাকে। গত বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে মাল্টার ফলন ভাল হয়েছে। প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৪০ টাকা দরে।
ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এখলাস হোসেন জানান, ঘোড়াঘাটসহ দিনাজপুরে ধান চাষের পাশাপাশি মাল্টা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ধান উৎপাদনের চেয়ে মাল্টা চাষে ১০ গুন বেশি লাভবান হতে পারে কৃষক। ভূ-গর্ভের অল্প পানি উত্তোলন করে, কম খরচে ফলজ বাগান তৈরী করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে অনেকে এগিয়ে আসছে।
উল্লেখ্য, হিমালয়ের পাদদেশে দিনাজপুরের অবস্থান হওয়ায় ভৌগলিক কারণে এ এলাকায় মাল্টা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/ তাফসীর আব্দুল্লাহ