সরকার যখন নদী বাঁচাতে খননসহ নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করছে, তখন সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণের নামে হুরা সাগর নদী ভরাট করছে উপজেলা প্রশাসন। এতে নদীর গতিপথ বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হয়ে পড়েছে।
পাউবো বলছে, নদী ভরাট করা মানেই নদী খননে ডেল্টা পরিকল্পনার সাথে সাংঘর্ষিক। এ অবস্থায় দ্রুত নদীরক্ষায় নদী ভরাট বন্ধের দাবি জানিয়েছেন পাউবোসহ স্থানীয়রা।
জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর, কামারখন্দ ও বেলকুচির মধ্য দিয়ে হুরা সাগর নদীটি প্রবাহিত হয়ে শাহজাদপুর করতোয়া নদীতে মিশেছে। নদীটি চারটি উপজেলার মানুষের জন্য আর্শীবাদ হয়ে রয়েছে। কৃষিকাজে সেচের জন্য নদীটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। মৎস্য সম্পদেও নদীটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব থাকায় বিভিন্ন সময়ে নদীটি খনন করা করা হয়েছে। সম্প্রতি ব-দ্বীপ পরিকল্পনার আওতায় নদীটির খননের উদ্যোগ নিয়েছে পাউবো। এ অবস্থায় হঠাৎ করেই কামারখন্দ উপজেলা প্রশাসন নদীটির চৌবাড়ী পয়েন্টে মাটি ভরাট করে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে। ৩৫ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে কয়েক লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে নদী দখল করে বালু ভরাট করা হয়েছে। এতে নদীটির গতিপথ বন্ধ হবার উপক্রম হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা লাভু হোসেন, দুলাল হোসেন ও আজিজুল সেখ জানান, সরকার যখন নদী খননে উদ্যোগ গ্রহণ করছেন তখন কামারখন্দ উপজেলা প্রশাসন প্রবাহমান নদীটি ভরাট করায় নদীটির গতিপথ বন্ধ করে দিচ্ছে। এতে নদীটি পানি শূন্য হয়ে মরাখালে পরিণত হবে। এতে কৃষকদের ও জেলেদের চরম ক্ষতি হবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, হুড়াসাগর নদী ভরাট করে আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মাণ একেবারেই অপরিকল্পিত। এটি ডেল্টা খনন পরিকল্পনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ প্রকল্প শুরুর আগে পাউবোর মতামত তো দূরের কথা পাউবোকে জানানোও হয়নি। ভরাটের বিষয়ে জানান, নদীর যাতে ক্ষতি না হয় সেজন্য ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে পত্র দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ব-দ্বীপ পরিকল্পনা আওতায় আগামীতে হুড়াসাগর নদীটির প্রায় ৩৫ কিলোমিটার অংশ খননের পরিকল্পনা রয়েছে নেয়া হয়েছে। এখন নদীটি ভরাট করে হত্যা করা হলে পাউবোর সেই পরিকল্পনা কোন কাজেই আসবে না।
কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলছেন, ভূমি মন্ত্রণালয় পরিদর্শনপূর্বক জায়গাটি নির্ধারণ করে দিয়েছে। আর উপজেলা প্রশাসন শুধু বাস্তবায়ন করছে। তাদের মতে নদীর মূল প্রবাহ ভরাট করার স্থান থেকে আরো ১৫ মিটার দূরে। তবে শুষ্ক মৌসুমে দখল দৃশ্যমান না হলেও বর্ষা মৌসুমে দখল দৃশ্যমান হবে বলে তিনি মনে করছেন।
তিনি আরো জানান, বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে তারা পরিদর্শন করে যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেভাবেই গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল