বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার প্রাক্তন সভাপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রবীণ বৌদ্ধ ধর্মীয়গুরু কক্সবাজারের রামু কেন্দ্রীয় সীমাবিহারের অধ্যক্ষ পন্ডিত ভদন্ত সত্যপ্রিয় মহাথেরো পরলোকগমন করেছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ১ টার দিকে ঢাকাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সাবেক পিজি হাসপাতাল) এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। সমাজসেবায় অবদানের জন্য তিনি ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক একুশে পদক লাভ করেন।
সত্যপ্রিয় মহাথের ১৯৩০ সালের ১০ জুন কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের পশ্চিম মেরংলোয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হরকুমার বড়ুয়া এবং মাতার নাম প্রেমময়ী বড়ুয়া। তিনি তার বাবা-মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে কনিষ্ঠতম। ১৯৫০ সালে তিনি প্রবজ্যা ধর্ম দীক্ষিত হয়ে সত্যপ্রিয় নাম ধারণ করেন। পরের বছর তিনি ভিক্ষু ধর্মে দীক্ষিত হন। ১৯৫৪ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য মায়ানমার পাড়ি জমান। সেখানে তিনি দশ বছর লেখাপড়াা, গ্রন্থ রচনা ও সাধনা করেন।
মায়ানমার থেকে ১৯৬৪ সালে দেশে ফিরে এসে তিনি রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারে পাঠদানে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি এই বিহারের অধ্যক্ষ পদে আসীন রয়েছেন। এছাড়া ২০০৬ সালে বাংলাদেশী বৌদ্ধ ভিক্ষুসংঘের সর্বোচ্চ ধর্মীয় সংগঠন বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার সভাপতির পদ লাভ করেন। সত্যপ্রিয় বৌদ্ধ ধর্ম বিষয়ক অনেক গবেষণাধর্মী গ্রন্থ রচনা করেছেন।
তিনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি ত্রিপিটকের অভিধর্ম পিটকের অন্তর্গত 'চুলবর্গ' গ্রন্থ পালি থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন। গ্রন্থটি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। তিনি সমাজসেবায় একুশে পদক (২০১৫), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বৌদ্ধ ছাত্র সংসদ কর্তৃক শান্তি পুরস্কার (২০১০), সমাজসেবায় অবদানের জন্য মায়ানমার থেকে 'অগ্গমহাসদ্ধর্মজ্যোতিপতাকা' (২০০৩) সম্মাননা সহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল