টাঙ্গাইলের বাসাইলে স্ত্রী হত্যা মামলায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘাতক স্বামীকে আট করেছে থানা পুলিশ। আজ রবিবার দুপুরে আটককৃত শাহিনুর রহমানকে টাঙ্গাইল আদালতে প্রেরণ করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কাশীল ইউনিয়নের স্থলবল্লা গ্রামের শাহিনুর তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তারকে বর্ষা (দেশীয় অস্ত্র) দিয়ে হত্যা করার পর স্বপরিবারে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে ঘটনার পরের দিন সকাল ৬টা দিকে বাসাইল বাজার থেকে ঘাতক শাহিনুরকে আটক করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৬ বছর আগে বাসাইল পৌরসভার ব্রাক্ষনপাড়িল এলাকার মোন্নান মিয়ার বড় মেয়ে স্বপ্না আক্তারের (২৮) সাথে একই উপজেলার কাশীল ইউনিয়নের স্থলবল্লা গ্রামের সামাদ মিয়ার ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী শাহিনুর রহমানের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের ৮ বছর পর তাদের ঘরে হাসান এবং ১৫ বছর পর মুস্তাকিন নামের ২ ছেলের জন্ম হয়। ৬ বছর আগে শাহীনুর সৌদি আরব থেকে স্থায়ীভাবে দেশে চলে আসে। দেশে আসার পর স্ত্রী স্বপ্না আক্তার তাকে যেকোন চাকুরী বা ব্যবসা করতে বলেন। স্বামীর বেকারত্ব নিয়ে উভয়ের মধ্যে মাঝে মাঝেই কথা কাটাকাটি হয়।
চলতি বছরের জুলাই মাসে শাহীন ওয়াল্টন কোম্পানীতে চাকরি নেয়। আড়াই মাস চাকুরী করার পর গত ১৫/২০ দিন আগে সে চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে চলে আসে এবং স্ত্রীকে তার বাবার বাড়ির ওয়ারিশের সম্পত্তি আনার জন্য ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে। চাকরি ছেড়ে দেওয়া, ওয়ারিশের সম্পত্তি আনা এসব বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে পুনরায় ঝগড়া হলে গত ২ সপ্তাহ আগে স্ত্রী স্বপ্না স্বামী শাহীনুরের সাথে আর সংসার করবেনা বলে তার বাবার বাড়ি ব্রাক্ষনপাড়িল চলে আসে।
এক সপ্তাহ আগে শাহীনের বাবা সামাদ মিয়া এবং মা তারা ভানু অনেক বুঝিয়ে স্বপ্নাকে আবারো তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। কিন্তু আবারও শাহীন স্ত্রীকে ওয়ারিশের সম্পত্তি আনতে চাপ দিতে থাকে এবং গতকাল শনিবার ভোরে এনিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে শাহিনুর তার ঘড়ে থাকা ধারালো বর্ষা (দেশীয় অস্ত্র) দিয়ে স্বপ্নাকে বুকে পিঠে আঘাত করে। গুরুত্বর অবস্থায় স্বপ্নাকে শাশুড়ী তারা ভানু এবং পাশ্ববর্তী মসজিদের ইমাম টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। এসময় হাসপাতালে লাশ ফেলে রেখে শাশুড়ি তারা ভানু পালিয়ে যায়।
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ