ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগে ভুয়া কাজ ও বিল ভাউচারে লোপাট ১০ কোটি টাকা শিরোনামে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরই জের ধরে গণপূর্ত বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর অফিসের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নন্দিতা রানী সাহা স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। চিঠিতে তিনি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খুলনা সার্কেলকে আগামী ৩ কর্মদিবসের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামত প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ করেছেন।
এদিকে, তদন্তের তথ্য আগে থেকে জানতে পেরে ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাঈখ নিজের সীমাহীন দুর্নীতি আড়াল করতে ঠিকাদার সেজে বিভিন্ন সরকারী ভবনের মেরামত ও বৈদ্যুতিক কাজ শুরু করেছেন। শনিবার দুপুরে নিজ বাসভবনে নির্বাহী প্রকৌশলীর বাসভবনের সীমানা প্রাচীর উঁচুকরণ কাজ করছেন।
এছাড়া তিনি লোক নিয়োগ দিয়ে ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়া ডরমেটরি ভবন, নন গেজেটেড ডরমেটরি ভবন, জেলা জজের বাসা, সাবডিভিশন অফিস ও গণপূর্তে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর বাসাসহ প্রায় ৪০টি সরকারি অফিস তড়িঘড়ি করে রংচং শুরু করেছেন।
নতুন করে অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাব স্টেশনের যন্ত্রপাতি সরবরাহ ও স্থাপন কাজের টেন্ডার বাতিল করে সেই কাজের আবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে। চুক্তি সম্পাদন না করায় চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের ১৭২ নং স্মারকে ঢাকার মেসার্স লিজা এন্টারপ্রাইজের টেন্ডারটি বাতিল করা হয়। কিন্তু মাসিক ক্যাশ হিসাব রেজিস্ট্রারে দেখা গেছে বাতিল হওয়া কাজের বিপরীতে ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। চলতি বছরের ১৬ জুন গ-০১৯৬০৩ নং চেকের মাধ্যমে মেসার্স লিজা এন্টারপ্রাইজকে এই টাকা দিয়েছেন গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাঈখ। এদিকে ঝিনাইদহ জেলায় ৭টি মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ গোপনে 'টেন্ডার রেট' জানিয়ে দিয়ে তার পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
অধিদপ্তর থেকে তদন্ত আসার খবরে নতুন করে কাজ শুরু করা ও বাতিল টেন্ডারে বিল দেওয়ার বিষয়ে কথা বলতে ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাঈখের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারি প্রকৌশলী শাওন হাওলাদারের কাছে নির্বাহী প্রকৌশলীর বাসভবনে রংচং করা ঠিকাদারের কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, এই মুহূর্তে ঠিকাদারের নাম বলতে পারছি না। নির্বাহী প্রকৌশলীর স্যারই সঠিক করে বলতে পারবেন।
উল্লেখ্য; গত ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার প্রথম পাতায় শেষ কোথায় এই অনিয়মের: ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগে ভূয়া কাজ ও বিল ভাউচারে লোপাট ১০ কোটি টাকা শিরোনামে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর নড়েচড়ে বসেন গণপূর্ত বিভাগ প্রধান প্রকৌশলীর অফিস। পরে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নন্দিতা রানী সাহা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি তদন্তের উদ্যোগ নেন।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব