মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আকস্মিক পরিদর্শন করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী এবং স্থানীয় সাংসদ মো. শাহাব উদ্দিন। এসময় তিনি বিভিন্ন অনিয়ম দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
শনিবার বিকেল তিনটায় আকস্মিক বড়লেখা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনে যান পরিবেশ মন্ত্রী।
এসময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অনুপস্থিত। এছাড়াও জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. শারমিন আক্তার ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফেরদৌস আক্তারকে পাননি তিনি। মন্ত্রী আসার খবরে তারা ছুটে আসেন। এরপর মন্ত্রী হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন এবং ভর্তি থাকা রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে কথা বলেন।
পরিদর্শনকালে মন্ত্রী রোগীদের জন্য সরবরাহ করা খাবরের মান (নিম্নমানের), মেডিকেল অফিসারদের অনুপস্থিতি, গত ৬ মাস থেকে স্বাস্থ্য সেবা কমিটির মিটিং না হওয়া, সরকারি কর্মচারীদের অ্যাম্বুলেন্স বাণিজ্য, রেজিস্টারবই চেক করে আপডেট তথ্য না পাওয়াসহ নানা কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এসময় মন্ত্রী হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালকের সাথে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট থাকার কারণ নিয়ে মুঠোফোনে কথা বলেন। ব্যক্তিগত অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে ব্যবসা করার বিষয়েও কথা বলেন তিনি।
এসময় মন্ত্রীর সঙ্গে বড়লেখা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম আল ইমরান, বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার উদ্দিন, বড়লেখা পৌরসভার কাউন্সিলর জেহীন সিদ্দকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহম্মদ হোসেন একটি কর্মশালায় যোগ দিতে ঢাকায় যান। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তার ছুটি ছিল। কিন্তু ছুটি শেষ হলেও তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন।
এই বিষয়ে ডা. আহম্মদ হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি ট্রেনিং এ ছিলাম। আমাদের হাসপাতালের একটি পুরস্কার পাওয়ার কথা ঘোষণা হয়। এটা রবিবারে গ্রহণ করার কথা। তাই যাওয়া-আসার কথা চিন্তা করে থেকে যাই। ঢাকায় অবস্থানের বিষয়ে সিভিল সার্জন মহোদয়কে অবগত করেছি।’
চিকিৎসকদের উপস্থিত না পাওয়া প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফেরদৌস আক্তার মুঠোফোনে বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় আসছিলেন। তিনি আসবেন এটা আমরা আগে জানতাম না। আমি অন্যরুমে ছিলাম। তাই তাৎক্ষণিক দেখা হয়নি। মন্ত্রী মহোদয় তিনটার পর আসছিলেন। নিয়ম হচ্ছে ৫০ শয্যায় জরুরি বিভাগে সেকমো থাকবে। সব সময় ডাক্তার বসে থাকার নিয়ম নেই। দুপুর আড়াইটার পর ডাক্তাররা অনকলে থাকেন। মন্ত্রী মহোদয়কে আমি বিষয়টি অবগত করেছি।’
মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, ‘বাস্তব চিত্র দেখতে কাউকে না জানিয়েই হাসপাতালে পরিদর্শনে যাই। রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে কথা বলেছি। কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে।’
সূত্র আরও জানায়, সম্প্রতি বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিন কর্মচারীর বিরুদ্ধে অ্যাম্বুলেন্স বাণিজ্যের অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী আকস্মিকভাবে হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন