৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৭:৪৯

বগুড়ায় আলু চাষের জমি কম তবুুও ভালো ফলনের আশা

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

বগুড়ায় আলু চাষের জমি কম তবুুও ভালো ফলনের আশা

বগুড়ায় এক বছরের ব্যবধানে ১০ হাজার হেক্টর কম জমিতে আলু চাষ হলেও বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা করছে চাষী ও কৃষি বিভাগ। কৃষি কর্মকর্তার ও আলু চাষীরা বলছেন, গত বছরের মত এবছরও আলুর ভালো ফলন পাওয়া যাবে। 

এদিকে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, আসছে নতুন বছরে জেলায় আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সোয়া ১২ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু জেলার চাষীরা জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাত ব্যবহারের কারণে শেষ পর্যন্ত ফলন সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টনে দাঁড়াবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

জেলা কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, জেলায় কৃষি অফিস থেকে উচ্চফলনশীল আলু আবাদে এবং জৈব সার ব্যবহারে উৎসাহিত করা হয়েছে। এসব কারণে জেলায় আলুর উৎপাদন বাড়বে। নবান্ন উপলক্ষ্যে আগাম জাতের কিছু আলু উত্তোলন করা হয়েছে বগুড়ায়। নতুন উত্তোলন করা আলু বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে মান অনুযায়ী ৭০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। ডিসেম্বর মাসের শেষ দিক এবং জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে জেলায় আলু উত্তোলন শুরু হবে। বগুড়ার শিবগঞ্জ, সোনাতলা, ধুনট, শেরপুর উপজেলায় আলুর ক্ষেত এখনো সতেজ রয়েছে। 

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় গত ২০১৮ মৌসুমে জেলায় আলুর আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৬৫ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। ফলন ছিল ১৩ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু এবছর চাষের জমি কমে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ৫৫ হাজার ৪৫৪ হেক্টর। আর ফলন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৭৩৮ হাজার মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত জেলায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন পাওয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে ফলন লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টনে দাঁড়াবে। বগুড়ায় ফলন বৃদ্ধি পাওয়ায় আলুর দাম নিয়ে কৃষকরা খুশি না হতে পারলেও বাজার ব্যবস্থায় আলুর দাম সহনীয় থাকায় ভোক্তারা ছিল নিশ্চিন্ত।

বগুড়া সদর উপজেলার কালিবালা এলাকার আলু চাষীরা জানায়, আলু গাছ বেশ সতেজ রয়েছে। কোল্ড ইনজুরি হয়নি। বেড বাঁধায় করার পর থেকে জমির আলু গাছগুলো লম্বা হয়েছে। ছোট ছোট ডালপালা ছড়িয়েছে। গত বছর ভালো ফলন পেয়েছেন। এবছরও ভালো ফলন পাবেন। 

বাজারে দাম না থাকার বিষয়ে তারা বলেন, কৃষকের ঘর থেকে আলু বের হওয়ার পর বাজারে আলুর দাম কিছুটা হলেও বাড়ে। আলু চাষীরা আলুর দাম পেলে আলু চাষে আরও আগ্রহ বাড়বে। 

বগুড়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফরের উপ-পরিচালক আবুল কাশেম আযাদ জানান, চলতি বছর ঝড়-বৃষ্টির কারণে আমন ধান কাটতে দেরি হয়েছে। সে কারণে আলু আবাদে অনেক চাষী পিছিয়ে পড়েছে। ৫৫ হাজারের ৪৫৪ হেক্টর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আর ফলন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টন। জেলার কৃষকরা আমন ধান কেটে জমি তৈরি করে আবার আলু চাষে ঝুঁকেছেন। যারা আগে আলু চাষ করেছেন তারা কিছু কিছু আলু তুলেছেন। আর বেশিরভাগ জমিতে এখন আলুর গাছগুলো বড় হয়েছে। 

ডিসেম্বরের শেষে আলু উত্তোলন করা হবে। খাওয়ার জন্য আলু জমি থেকে ৬০ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে আলু উত্তোলন করতে হয়। আর কোল্ড স্টোরে রাখতে আলু ৯০ থেকে ৯৫ দিনের হতে হয়। জেলার আলু চাষীদের জন্য উন্নতমানের বীজের পাশাপাশি সারের কোন সমস্যা হয়নি। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন এবারো পাওয়া যাবে। 

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর