বরিশালে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিককে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করে ফেনসিডিল দিয়ে থানায় সোপর্দ করার অভিযোগ উঠেছে গোয়েন্দা পুলিশের কতিপয় সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিচার চেয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সৈয়দ কায়েসের স্ত্রী তাহমিনা কায়েস।
তিনি জানান, গোয়েন্দা পুলিশের এক সদস্যের ভাগ্নের সাথে ব্যবসায়িক বিরোধের জেরে সৈয়দ কায়েসকে এ অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, আটকের পর নির্যাতন না করার শর্তে গোয়েন্দা পুলিশের এসআই নজরুল এবং কনস্টেবল সালামসহ অন্যান্যরা তার বাসায় গিয়ে নগদ ১ লাখ টাকা ঘুষ নেন বলেও তাহমিনা কায়েস অভিযোগ করেন।
এদিকে, পুলিশ কমিশনারের কাছে তার স্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগের তদন্ত করছেন গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রেজাউল করিম। বুধবার দুপুরে তদন্ত কমিটির প্রধান রেজাউল করিমের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন কায়েস ও তার স্ত্রী। এসময় তিনি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের আলামত ভিডিও করে রাখেন।
সৈয়দ কায়েস তার দাঁত-কাঁধের হাড় ভেঙে ফেলা ও পায়ে ক্ষত করে দেওয়ার অভিযোগ করে বলেন, কনস্টেবল সালামের ভাগ্নে কাফির সাথে তার ব্যবসায়িক পূর্ব বিরোধ রয়েছে। ওই ঘটনার কিছুদিন আগে তিনি বাটারগলিতে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে কাফিকে ২টি থাপ্পড় দেন। ওই থাপ্পড়ের প্রতিশোধ নিতে কাফি তার মামা কনস্টেবল সালামের সহায়তায় এসআই নজরুলকে ব্যবহার করে মাদক উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে তাকে নির্যাতন করেছে।
তবে কায়েসকে নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেন গোয়েন্দা পুলিশের এসআই নজরুল। তিনি বলেন, তাকে মারধর করলে ডাক্তারের কাছে নিতে হতো। তাকে কি ডাক্তারখানা নেওয়া হয়েছে? কনস্টেবল নজরুলের আত্মীয় কাফি কিংবা কায়েসকে তিনি চেনেন না। কারো ইন্ধনে কায়েসকে নির্যাতন করা হয়নি। তাকে দুই বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করা হয়েছে। এখন তার পরিবার টাকা নেওয়ার অভিযোগ করলে কি করার আছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই সুজিত জানান, মামলাটির চার্জশিট প্রস্তুত হচ্ছে। মামলার তদন্তে বাদীর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। জব্দ তালিকায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাক্ষীদের সাক্ষর রয়েছে। সৈয়দ কায়েসের স্ত্রীর করা অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়নি।
এ বিষয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, পুলিশের ভালো কাজটা হচ্ছে অপরাধী ধরা মাদক উদ্ধার করা ইত্যাদি এবং এটাই পুলিশ করছে। কিন্তু পুলিশের কেউ যদি ভালো কাজ করতে গিয়ে নিজেই অপরাধে জড়িয়ে পড়ে বা কারো কাছ থেকে অনৈতিক কোন সুবিধা নেয় তাহলে তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার বিধান আছে। অভিযোগ উঠেছে বলেই তদন্ত হচ্ছে। যদি তদন্তে পুলিশের কোন সদস্যের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হয় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক