৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৯:৪০

চোখ উপরে ফেল‌লেও সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ হয়‌নি কানা র‌মি‌জের!

শরীয়তপুর প্র‌তি‌নি‌ধি:

চোখ উপরে ফেল‌লেও সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ হয়‌নি কানা র‌মি‌জের!

এই সেই কানা রমিজ।

চোখ দু‌'টোই নেই, তবুও র‌য়ে‌ছে এলাকায় প্রভাবশালী সন্ত্রাসী বা‌হিনী। হামলা, মারধর, নির্যাতন, অত্যাচার ও লাঞ্ছনার শিকার হ‌য়ে অতিষ্ট ক‌য়েক‌টি এলাকার হাজারও মানুষ। থানায়ও র‌য়ে‌ছে হত্যাসহ ডজন খা‌নেক মামলা, গড়ে তুলেছে নিজস্ব এক বিশাল বাহিনী। বর্তমা‌নে সরকা‌রি দ‌লে অনুপ্রবেশকারী শরীয়তপু‌রের এক সন্ত্রাসী কানা র‌মি‌জ ও তার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে মাদক, চোরাকারবারি, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিসহ আছে নানা অপরাধের সাম্রাজ্য। য‌দিও এখন বিচার চে‌য়ে প্রতিবা‌দে রাস্তায় নে‌মে‌ছে সাধারন মানুষ।

শরীয়তপুর সদর উপ‌জেলার চিকন্দি গ্রা‌মের বা‌সিন্দা মোতা‌লেব মাদবর। ২ লাখ টাকা চাঁদা ‌দি‌তে অস্বীকার করায় কানা র‌মি‌জ বাহিনীর হামলায় এখন পঙ্গু তি‌নি। চলা‌ফেরাও কর‌তে পা‌রছে না বে‌শি একটা। টাকারও অভা‌বে খে‌তে পারে না ঔষধ। তবুও চান একটু শা‌ন্তি‌তে থাক‌তে। মোতা‌লেব মাদবর ব‌লেন, আমাকে মার‌পি‌টের প‌রে পা ভে‌ঙে‌ছে, বু‌কের খাচা ভে‌ঙে‌ দিয়েছে। অভি‌যোগ করায় বা‌ড়িঘ‌রে হামলা লুটপাট ক‌রে নি‌য়ে গে‌ছে সব‌কিছু। টাকার অভা‌বে ছে‌লে‌কেও এবার পরীক্ষা দেওয়াতে পারি নাই। কি কর‌বো জা‌নিনা, ত‌বে এই সন্ত্রাসী মুক্ত এলাকা চাই।

একা‌ধিক ভুক্তভোগীর অভি‌যোগ, চিক‌ন্দি ইউনিয়‌নসহ আশেপা‌শের ক‌য়েক‌টি এলাকায় এমন ‌বিস্তার ঘটায় এই কানা র‌মিজ বা‌হিনী। ‌জি‌ম্মি ক‌রে রে‌খে‌ছে সাধারণ মানুষ‌কে। ব্যবসা প্র‌তিষ্ঠানও খো‌লে যার কথায়, বা‌হিনীর সদস্যরাও সময় ম‌তো এসে নেন চাঁদার টাকাও। কেউ এতে প্র‌তিবাদ কর‌লে উল্টো হয়রা‌নি হ‌তে হয় ভুক্তভোগীকে। এমনকি বাড়ি ঘরে হামলা, লুটপাট চালায় রাতের আধারে, আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় সব‌কিছু।

চিকন্দীর বাজারের বিল্লালের মোড়ের এক চায়ের দোকানী জানান, তার কাছ থেকে চা খেতে এসেছিলো কানা রমিজের ছেলে ও তার সন্ত্রাসী গ্রুপের কয়েকজন। চা দিতে একটু দেরী হওয়ায় তাকে বেধরক পিটিয়ে আহত করে তারা। কিন্তু প্র‌তিবাদ করে নাই কেউ, ভ‌য়ে মামলা ক‌রে নাই তি‌নি।

আর এই প্রভাবশালী সন্ত্রাসী বা‌হিনী নিয়ন্ত্রন ক‌রার অ‌ভি‌যোগ র‌য়ে‌ছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দী ইউনিয়নের আবুরা গ্রামের আব্দুল আজিজ খাঁর ছেলে রমিজ খাঁ ওরফে কানা রমিজের বিরুদ্ধে। এলাকাবাসীর কাছে যার নাম‌টিও আতঙ্কের। য‌দিও এই কানা বলার পিছ‌নে র‌য়ে‌ছে একা‌ধিক ঘটনা। অন্যায় অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকার মানুষ উপরে ফেলে তার দু‌টি চোখ। তবুও থামা‌নো যায়‌নি তা‌কে, গ‌ড়ে তু‌লে‌ছেন ভয়ংকর বা‌হিনী। 

রমিজ খাঁর বিরু‌দ্ধে এত অ‌ভি‌যো‌গ কেন, জান‌তে তার বা‌ড়ি‌তে গে‌লেও পাওয়া যায়‌নি তা‌কে। ত‌বে তার প্রথম স্ত্রী জানান, তার স্বামী ও সন্তানরা কোন অপরা‌ধী ক‌রে নাই। এলাকায় তা‌দের এ‌মন কোন অ‌ভি‌যোগ নেই। এলাকায় দরবার সালিশ করায় মানুষ এসব কথা ব‌লে।

এদি‌কে, বা‌হিনীর প্রধান কানা রমিজের চোঁখ না থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তার বিরুদ্ধে নিতে পারে না তেমন কোনো পদক্ষেপ। বরাবরই থাকেন গ্রুপ নিয়ে সুবিধাবাদী রাজনীতির পেছনে। ফলে তার বিরুদ্ধে স্থানীয়রা কেউ কোনো অভিযোগ করতে সাহসও পায় না। ত‌বে অ‌ভি‌যোগ পে‌লেই সা‌থে সা‌থে ব্যবস্থা নেওয়া হয় বল‌ছে পু‌লি‌শ।

‌শরীয়তপুর পু‌লিশ সুপার আব্দুল মে‌মেন ব‌লেন, মারামারির ব্যাপারে একটি মামলা হয়েছে । এ ব্যপারে দুইজনকে আটক করা হয়েছে । বাকিদের আটক করা হবে। চাঁদাবাজি যে করবে তাদেরকে আটক করা হবে। তবে চাঁদাবাজির ব্যপারে কোন অভিযোগ এলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। য‌দি কেউ সাধারন মানুষ‌কে হয়রা‌নি ক‌রে থা‌কে, তা‌দের বিরু‌দ্ধে আমরা ব্যবস্থা নি‌বো। ভুক্তভু‌গি‌দের পু‌লিশের কা‌ছে অভি‌যোগ করার পরামর্শ দেন।

 

বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর