শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার গোসাইরহাট ইউনিয়নের টেংরা গ্রামে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে টাকা না দেওয়ায় গরম পানি দিয়ে সোনিয়া আক্তার নামের এক গৃহবধূর শরীর ঝলসে দিয়েছেন তাঁর স্বামী। গুরুতর অবস্থায় আজ শনিবার সকাল ৯ টার দিকে তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত সোনিয়া আক্তার (২২) ইউনিয়নের টেংরা গ্রামের আবুল হোসেন সরদারের স্ত্রী। তার আরিফা সিনহা নামে এক বছরের একটি মেয়ে আছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বিছানায় কাতরাচ্ছেন সোনিয়া। শরীরের অর্ধেক অংশ কাপড়ে ঢাকা। পিঠ, হাত, গলাসহ যেটুকু আবরণহীন তার পুরোটাই ঝলসে গেছে।
সোনিয়া আক্তর জানান, তিনি টেংরা এলাকায় চায়ের দোকান করেন। তার স্বামী আবুল হোসেন সরদার পেশায় শ্রমিক। তিনি গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সোনিয়ার কাছ থেকে ১০০ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তখন আবুল হোসেন বেশ রেগে যান। পরে গালাগাল শুরু করেন। একপর্যায়ে ছুটে এসে চায়ের দোকান থেকে গরম পানির কেটলি তুলে তার শরীরে ঢেলে দেন।তিনি আরও জানান, ২০১৭ সালে তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তার বাবার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা এনে স্বামীকে যৌতুক দিয়েছেন। এরপরও বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য মারধর করতো তাকে।
আহত সোনিয়ার স্বামী আবুল হোসেন সরদার বিষয়টি স্বীকার করে মোবাইল ফোনে বলেন, আমার স্ত্রী সোনিয়ার সঙ্গে টাকা নিয়ে বাকবিতন্ডা হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির সময় দোকানের চায়ের কেটলি নিয়ে টাকাটানি হলে গরম পানি তার শরীরেও পরে, আমার শরীরেও পরেছে।
আহত সোনিয়ার খালোতো বোন মাকসুদা বেগম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, এতে সোনিয়ার শরীরের পঞ্চাশ শতাংশ ঝলসে যায়। তিনি মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে চিৎকার করতে থাকেন। এ সময় স্বামী তাকে ফেলে রেখে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয়রা সোনিয়াকে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোসাইরহাট সার্কেল মো. মোহাইমিনুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমি জানলাম। এখনও কোন অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ