বগুড়ার বাজারে আবারও বাড়ছে পিয়াজের দাম। শুক্রবারের পর শনিবারও বগুড়ায় পিয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। ১২০ টাকা কেজি পিয়াজের হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক পরিবারেই বাজার খরচ বেড়েছে।
পিয়াজের দাম কমার পর আবারও বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে নানা অভিযোগ। ক্রেতারা বলছেন, নানা কৌশল করে কিছু ব্যবসায়ী পিয়াজের দাম বাড়িয়েছে। এদিকে, পিয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেকেই পিয়াজের ফুলের ডাটা ব্যবহার শুরু করছেন।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বগুড়া জেলা কৃষির দিক থেকে আদর্শ। এ জেলায় ধান, পাট আলু, সরিষা, গম, ভুট্টা, সবজি এমনকি সকল মসলা জাতীয় ফসলও চাষ হয়ে থাকে। এখানকার চাষিরা বেশ পরিশ্রমী এবং মাটি উর্বরতার কারণে ভাল ফলন পাওয়া যায়। জেলায় এবার ৪ হাজার হেক্টর জমিতে পিয়াজ চাষ করেছে চাষিরা। ভাল ফলনও পেয়েছে চাষিরা।
কৃষি বিভাগ বলছে, শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ৩৭ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি পিয়াজ উৎপাদন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। বগুড়ার চাষিরা অল্প পরিমাণে পিয়াজের বীজ সংগ্রহ করে থাকে। বেশির ভাগ কৃষক বীজ কিনে জমিতে চাষ করে থাকে। পিয়াজের ফুলের ডাটা বা স্থানীয় ভাষায় ফুলকা রেখে দিলে পিয়াজ বড় হয় না। বাড়তেও পিয়াজ সময় নিয়ে থাকে। সে কারণে চাষিরা পিয়াজের ডাটা ভেঙে ফেলে বাজারে বিক্রি করে।
বগুড়ায় পিয়াজের ফুলের ডাটা সালাদ ও তরকারির সাথে প্রচুর ব্যবহার করে থাকে। জেলার হাট গুলোতে ব্যাপক পিয়াজের ডাটা বেচা কেনা চলেছে। পিয়াজের বেড়ে যাওয়ায় তরকারির মধ্যে পিয়াজের ডাটা দিয়ে রান্নার কাজ সেরে নিচ্ছেন অনেকেই।
জেলার কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন জানান, বগুড়ায় যে পরিমাণ পিয়াজ চাষ হয় তা দিয়ে স্থানীয়ভাবে চাহিদা পূরণ হয় না। পিয়াজের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় বগুড়ার মানুষ পিয়াজের ফুলের ডাটা বা ফুলকার ব্যবহার আগে থেকে কয়েকগুণ বেড়েছে। ফুলকা সবজির মত করে ব্যবহার করছে। তবে তিনি বলেন, পিয়াজের ডাটা অনেক আগে থেকেই বা কালে কালে ব্যবহার হয়ে আসছে।
বগুড়ার মোকামতলার পিয়াজ চাষিরা জানান, পিয়াজের সাথে ফুলের ডাটা বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছেন। খুচরা বাজারের ফুলের ডাটা ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও পাইকারি হাটে আঁটি (এক গুচ্ছ) হিসাবে বিক্রি হচ্ছে। ফুলের ডাটা বাড়তি আয় হিসেবে দেখছেন চাষিরা। গত বছর এই সময় তারা ৪০ টাকা দরে পিয়াজ বিক্রি করেছে। ফুলকা বিক্রি হয়েছে ২০ টাকা কেজিতে। আর এবার ডাটায় ৪০ টাকা কেজি আর পিয়াজ দেড়শ টাকার উপরে।
বগুড়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানানো হয়, উত্তরাঞ্চলের পাবনা এবং যশোর, ফরিদপুরে নাটোর পিয়াজের বীজ তৈরি হয়ে থাকে সবচেয়ে বেশি। যে সব পিয়াজের ফুল থেকে বীজ হয়ে থাকে সে সব গাছের পিয়াজ বড় হয় না। এই সব পিয়াজের ফুল শুধু বীজের জন্য তৈরি হয়ে থাকে। বগুড়াসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় পিয়াজের ফুলের ডাটা তরকারির সাথে ব্যবহার হয়ে থাকে। এই ডাটা সালাদের ব্যবহারের প্রচলন আছে। ইদানিং পিয়াজের বাজার অস্থির বলে অনেকেই পিয়াজের ডাটা ব্যবহার করছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন